‘কালো’ বলে অ্যাপল স্টোরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি!
বর্ণবাদ বিশ্বের অন্যতম আদিম এক সমস্যা। অনেক আন্দোলন-বিপ্লবের পরও পৃথিবীর মানুষ থেকে বর্ণবাদ মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি। এবার অ্যাপলের মতো একটি বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের স্টোরেও বর্ণবাদের শিকার হতে হলো কিছু কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্রকে।
অস্ট্রেলিয়ার একদল কৃষ্ণাঙ্গ ছাত্র দাবি করছে, শুধু গায়ের রং কালো বলে অ্যাপলের একটি স্টোর থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে। বের করে দেওয়ার কারণ হিসেবে স্টোর থেকে বলা হয়েছে, তাদের দেখে মনে হচ্ছে তারা কিছু চুরি করতে চায়! ঘটনাটি জানা গেছে ইয়াহু নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে।
আর এ রকম অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটেছে মেলবোর্নের মেরিবিরনংয়ের একটি স্টোরে। ঘটনার সময় আবদুলাহি, জেরেঞ্জ, এসে, ম্যাবিওর, মোহামেদ ও পেট্রিজড নামের ছয়জন ছাত্র স্টোরে প্রবেশ করেছিল।
তাদের সবারই বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। প্রবেশ করার পর একজন কর্মকর্তা কয়েক নিরাপত্তাকর্মীকে নিয়ে তাদের সামনে হাজির হয় এবং বলে, তারা সন্দেহ করছে যে ছাত্ররা এখানে চুরি করতে এসেছে।
ছয়জনের কেউ একজন ঘটনাটি তার মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও করে ফেলে এবং মঙ্গলবার ফেসবুকে পোস্ট করে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার বার ভিডিওটি দেখা হয়েছে।
ফুটেজে খুব পরিষ্কারভাবে দেখা যায় যে একজন কর্মকর্তা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের দেখিয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে বলছেন, ‘ওরা স্টোরে আপনাদের উপস্থিতি নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা করছে। তারা ভাবছে, আপনারা কিছু চুরি করতে পারেন।’
ছাত্রদের মধ্যে কেউ একজন জিজ্ঞেস করে, ‘কেন আমরা চুরি করব?’
কিন্তু এর কোনো উত্তর না দিয়ে কর্মকর্তা বলেন, ‘কথা এখানেই শেষ। আমার আপনাদের এই স্টোর থেকে চলে যেতে বলতে হচ্ছে।’
ছাত্রদের মধ্যে একজন তার প্রতিক্রিয়ায় ম্যাশেবলকে জানায়, “ব্যাপারটি প্রচণ্ড অপমানজনক ছিল যখন তিনি যখন বলছিলেন, ‘আমরা চিন্তিত, আপনারা কিছু চুরি করতে পারেন।’ এটি বিস্ময়কর এবং একটি পরিষ্কার বর্ণবাদ।”
প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রদের অন্যতম মোহামেদ সেমরা ফেসবুকে বলেন, ‘বর্ণবাদ বন্ধ করতে হবে। আমেরিকায় যে বর্ণবাদ হয়, সেটি আমাদের অস্ট্রেলিয়ায় দরকার নেই।’
এদিকে অ্যাপলের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি তারা তদন্ত করছেন এবং অ্যাপলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এবং আমাদের স্টোরে যাঁরা উপস্থিত হন, আমরা তাঁদের সবাইকে স্বাগত জানাতে চাই।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আমরা বর্ণ, বয়স, লিঙ্গপরিচয়, জাতি এবং ধর্ম নির্বিশেষে সবার সমতায় বিশ্বাস করি। আমাদের পুরো প্রতিষ্ঠানেই এই বিশ্বাস প্রয়োগ করা হয় এবং সারা বিশ্বে এটি ব্যতিক্রমহীন।’