ইন্টারনেটবিহীন হতে চায় রাশিয়া
বিশ্বায়নের এই যুগে দেশগুলো যখন ক্রমাগত ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে, ঠিক তখনই জানা গেল বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়া নিজেকে ইন্টারনেট থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। শীর্ষ কিছু বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে সংবাদভিত্তিক মার্কিন টিভি চ্যানেলে ফক্স নিউজের ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা দেশটি ইন্টারনেট থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে টিকে থাকতে পারে কি না, তা পরখ করার জন্য এই পরিকল্পনা নিয়েছেন। মূলত রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বহির্বিশ্বে যেন কোনো তথ্য পাচার না হতে পারে, সেটা নিশ্চিত করাই এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য।
ইন্টারনেট সেবাদানকারী রাশিয়ান সংস্থা ‘ইআরটেলিকম’-এর পরিচালক আন্দ্রেই সেরেমিকোভ ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সম্প্রতি রাশিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রণালয় তাঁদের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে সাধারণ ব্যবহারকারীরা বহির্বিশ্বের তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে।’
রাশিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য এ রকম কোনো পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছেন। তবে রুশ পত্রিকা ‘আরবিকে’ জানিয়েছে, গত জুলাই মাসে সারা দেশকে ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করার এই পরীক্ষা চালানো হয়েছিল।
রাশিয়ার নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগসাজশে চালানো এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল, বহির্বিশ্ব থেকে তথ্যপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়ে নিজস্ব রুশ ডোমেইন ব্যবহার করে টিকে থাকা যায় কি না তা পরখ করে দেখা।
রাশিয়ার নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে আন্দ্রেই সলদাতোভ নামের এক বিশেষজ্ঞ টেলিগ্রাফকে জানান, ‘এটা চিরাচরিত রুশ পদ্ধতি। রাশিয়া স্পষ্টতই পশ্চিমা দেশগুলোকে বিশ্বাস করে না। তাই তারা ইন্টারনেটকে সম্পূর্ণ নিজেদের কুক্ষিগত করে রাখার জন্য এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে। মূলত পশ্চিমা বিশ্বকে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে প্রভাব বিস্তার করতে না দেওয়াই এর উদ্দেশ্য।’
গত কয়েক বছরে ইউক্রেন বা সিরিয়া ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার টানাপড়েন অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাই অনেক বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন, রাশিয়ার ওপর বড় ধরনের অবরোধ আরোপ করা হলেও যাতে দেশটি টিকে থাকতে পারে, সে জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।