আইনি বৈধতা পেল ‘গুগল-বুক’
গুগল এখন চাইলেই তাদের বই স্ক্যান করার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আদালত জানিয়েছে, ‘গুগল বুক’ নামক এই কার্যক্রম কোনো রকম মেধাস্বত্ব আইন ভঙ্গ করছে না। গত ১৩ অক্টোবর আদালতের এমন সিদ্ধান্ত জানার পর স্বভাবতই আনন্দে ভাসেন গুগল কর্মকর্তারা এবং অবশ্যই পাঠকরা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০০৫ সালে দায়ের করা এক মামলায় লেখকদের একটি দল দাবি করে আসছিল যে গুগলের এই বই স্ক্যান করার কার্যক্রম লেখকদের মেধাস্বত্ব অধিকারকে নষ্ট করছে। কিন্তু শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আপিল বিভাগের বিচারকরা লেখকদের এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই ডিজিটাল লাইব্রেরি একটি ‘ফেয়ার ইউজ’ এবং গুগলের মাধ্যমে জনসেবা দিচ্ছে।
মার্কিন লেখক সংঘ ‘অথার্স গিল্ড’-এর পরিচালক ম্যারি র্যাজেনবার্গার এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘আদালতের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক এবং অনেক লেখক এই সিদ্ধান্তে প্রচণ্ড অসন্তুষ্ট হয়েছেন।’
২০০৫ সালে এই অথার্স গিল্ড এবং আরো কিছু লেখক গুগলের এই বই স্ক্যানিং কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিয়েছিলেন। কারণ তাঁদের ধারণা, গুগল এভাবে বই স্ক্যান করে জনসাধারণের কাছে নিয়ে এলে এই বই বিক্রি করে তাঁরা কোনো অর্থ আয় করতে পারবেন না। ফলে চরমভাবে বিপর্যস্ত হবে তাঁদের মেধাস্বত্ব অধিকার।
তবে গুগলের ভাষ্যমতে, বই স্ক্যান করে তারা শুধুমাত্র বইয়ের ডিজিটাল সংস্করণ তৈরি করছে। পাঠকরা সার্চ দিয়ে বইয়ের শুধু উদ্ধৃতাংশ পড়তে পারবে, তাই মেধাস্বত্ব অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার কোনো উপায় নেই।
গুগলের পক্ষে রায় দিয়ে বিচারক পিয়েরে লেভাল জানিয়েছেন, ‘ছোট ছোট পাতায় ভাগ করা গুগলের বইগুলো আসলে একজন সার্চকারীকে শুধু সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে, বইটি তার আগ্রহের মধ্যে রয়েছে কি না! এখানে কোনোভাবেই লেখকদের মেধাস্বত্ব অধিকার হুমকির মুখে পড়ছে না।’
গুগল জানিয়েছিল, মামলায় হেরে গেলে তাদের প্রায় বিলিয়ন ডলার লোকসান গুনতে হতো। তাই আদালতের সিদ্ধান্তে গুগল আপাতত হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। আদালতের এই সিদ্ধান্তে গুগলের এক মুখপাত্র তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘আমরা খুবই খুশি যে আদালত আমাদের এই কার্যক্রমকে বৈধতা দিয়েছেন। বর্তমান ডিজিটাল যুগে এটি একটি কার্ড ক্যাটালগ হিসেবে কাজ করবে।’