কয়েক দশকের মধ্যেই মঙ্গলে বসবাস!
কয়েক দশকের মধ্যে মানুষ বসতি গড়বে লাল গ্রহ মঙ্গলে। আগামী কয়েক দশকের মহাকাশ বিষয়ে পরিকল্পনায় মঙ্গলের ব্যাপারে এমন আশার কথাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
সম্প্রতি ‘মঙ্গলে নাসার অভিযান : মহাকাশ অভিযানের পরবর্তী বড় পদক্ষেপ’ শীর্ষক পরিকল্পনাপত্রে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যেই মঙ্গলে বসবাসের গবেষণা শেষ হবে। পরিকল্পনাপত্রে মঙ্গলে বসতি স্থাপনে তিন ধাপে নাসার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। গবেষণার প্রথম ধাপ হবে পৃথিবীর ওপর নির্ভরশীল। দ্বিতীয় ধাপের গবেষণা করা হবে গভীর মহাশূন্যে, যেখান থেকে কয়েকদিনের মধ্যে পৃথিবীতে ফেরা যাবে। আর তৃতীয় ধাপের গবেষণায় পৃথিবীর ওপর কম নির্ভরশীল বা একদমই নির্ভরশীল হবে না।
নাসার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, প্রথম দুই ধাপের গবেষণার পর পৃথিবীর সহায়তা ছাড়াই তৃতীয় ধাপের গবেষণা সম্ভব হবে।
নাসা জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে স্বাধীন মানুষের উপনিবেশ মানুষের সভ্যতা ছড়িয়ে দেবে। মানুষ মঙ্গলে ঘুরতে নয়, বসবাস করতেই যাবে। মানুষ মঙ্গলে কয়েক বছর ধরে বসবাস করার পর শুধু নিয়মমাফিক রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন পড়বে। মঙ্গলে বসবাসকারী মানুষরা সেখানকার খনিজ ব্যবহার করেই জ্বালানি, পানি, অক্সিজেনসহ ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করবে। ওই সময়কার অত্যাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে পৃথিবীতে কোনো তথ্য পাঠানো যাবে।
নাসার গবেষকরা বলেন, মঙ্গলে মানুষের বসতির পূর্বে গবেষণা হবে পৃথিবীর ওপর নির্ভরশীল। গবেষণার প্রায় পুরোটাই সম্পন্ন হবে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘোরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস)। মহাকাশ স্টেশনের গবেষণার মধ্যে থাকবে বিভিন্ন যন্ত্রের কার্যক্ষমতা পরীক্ষা এবং দীর্ঘ সময় মহাশূন্যে থাকলে পৃথিবীর ওপর কী প্রভাব পড়ে। মঙ্গল অভিযানে অংশ নেওয়া মানুষকে কয়েক দশক মঙ্গলে থাকতে হতে পারে। আবার পৃথিবীতে না ফেরার আশঙ্কাও আছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে নাসার পরীক্ষা হবে পৃথিবীর ওপর কম নির্ভরশীল। এই পরীক্ষার স্থান হবে গভীর মহাকাশ। আর মানুষ যখন তৃতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ পৃথিবী ওপর নির্ভরশীলতার ন্যূনতম পর্যায়ে পৌঁছাবে তখনই শুরু হবে মঙ্গল বসতি স্থাপনের অভিযান। এই পর্যায়ে মঙ্গলের কক্ষপথ, মঙ্গলের কোনো চাঁদ বা মঙ্গল গ্রহে মানুষের অভিযান পরিচালিত হবে।
নাসার গবেষকরা বলেন, নাসা ও এর সহায়ক প্রতিষ্ঠানগুলো মহাকাশে মানুষের বসবাস নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। কখনো কি মঙ্গলে জীবন ছিল? এখনো কি মঙ্গলে জীবন আছে, মানুষের জন্য মঙ্গলে বসতি কি নিরাপদ হবে? মহাকাশের অন্য কোথাও বা পৃথিবীতে কীভাবে জীবনের শুরু হয়? মঙ্গল নিয়ে গবেষণায় পৃথিবীর অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কী তথ্য জানা যায়? এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই গবেষণা চলছে।