দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ট্যাব
১৯২৪ সালে যখন ব্রেইল পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে, তখন অন্ধ মানুষদের জন্য জ্ঞানের এক বিশাল দরজা খুলে যায়। আজ এই বর্তমানকালেও লাখ লাখ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্রেইল পদ্ধতিতে যোগাযোগ করছে জ্ঞানভাণ্ডারের সঙ্গে। কিন্তু এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেকটাই পিছিয়ে তারা। এবার তাদের জন্যই বিশেষভাবে তৈরি ট্যাবলেট কম্পিউটার আসছে বাজারে। বিগ থিংক জানিয়েছে এ খবর।
ব্লিট্যাব নামক এক প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিয়েছে এই অভিনব প্রযুক্তির। তিন বুলগেরিয়ান উদ্যোক্তার হাত ধরে আলোর মুখ দেখা এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ট্যাবলেটের নকশা করেছে। ই-বুকের আদলে তৈরি এই ট্যাবে ব্যবহার করা হয়েছে ‘লিকুইড-বেসড’ প্রযুক্তি। আর এই প্রযুক্তির ফলে ট্যাবের পর্দায় সৃষ্টি হবে বিভিন্ন ছোট ছোট আকারের বুদবুদের প্যাটার্ন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী একজন হাত রেখে সহজেই তথ্য নিয়ে নিতে পারবেন এর মাধ্যমে।
এই ট্যাবে সংযুক্ত থাকছে ইউএসবি পোর্ট। আর যার ফলে একজন ব্যবহারকারী সহজেই বিভিন্ন রকম ডক বা পিডিএফ ফাইল পড়তে পারবেন নিমিষেই। এই ফাইলগুলো ব্রেইলে কনভার্ট করে ট্যাবের পর্দায় তৈরি হয়ে যাবে। শুধু টেক্সট ফাইলই নয়, ওয়েবপেজ থেকে শুরু করে ম্যাপ, সবকিছুই সহজে ব্যবহার করা যাবে ব্লিট্যাবের এই ট্যাবে। এবং চাইলে একজন ব্যবহারকারী নিজেও বিশেষ কিবোর্ড ব্যবহার করে লিখতে পারবেন ট্যাবলেট কম্পিউটারটিতে।
‘এই মুহূর্তে অন্ধদের জন্য কিছু প্রযুক্তি বাজারে রয়েছে, কিন্তু সেগুলো খুবই ব্যয়বহুল’- জানালেন ব্লিট্যাবের সহ-উদ্যোক্তা স্লাভি স্ল্যাভ। তাঁর মতে, ‘ব্লিট্যাব এক বৈপ্লবিক প্রযুক্তি। আকার পরিবর্তনযোগ্য এই প্রযুক্তিতে আমরা সহজেই ছবি, জ্যামিতিক নানা আকার থেকে শুরু করে ম্যাপ পর্যন্ত তৈরি করতে পারছি। ব্লিট্যাব সহজেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শিক্ষা উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।’
এরই মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে ব্লিট্যাব। জিতেছে বেশ কিছু সম্মাননা ও পুরস্কার। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ব্লাইন্ড-এর মতো প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে তারা। তবে ব্লিট্যাবকে পরীক্ষামূলক পর্যায় থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করতে আরো কিছু বিষয় যাচাই বাছাই করতে হবে এর নির্মাতাদের। তবে উদ্যোক্তাদের আশা, ২০১৬ সালেই আলোর মুখ দেখবে ব্লিট্যাব, সঙ্গে অন্ধদের জন্য আলোর মুখ দেখাবে।