কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত শিক্ষামূলক অ্যাপ ‘বইঘর’ উদ্বোধন করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। আজ রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান বইঘরের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বইঘর শিক্ষা সহজীকরণ অ্যাপের নতুন সংস্করণ (৬.০) উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ইন্টারনেটের জন্য বাংলা ভাষায় স্থানীয় ডিজিটাল উপাত্ত ভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে, আমরা যদি শিশুদের হাতে ইন্টারনেট ও ডিজিটাল ডিভাইস প্রদান করি, তবে তাদের বিনোদন ও পড়াশোনার জন্য শিশুদের উপযোগী ডিজিটাল উপাত্ত ভাণ্ডার গড়ে তোলা অপরিহার্য।’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আরো বলেন, ‘শিশুদের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে তাদের লেখাপড়া করার আগ্রহ সৃষ্টি করা হয় না।’ শিক্ষাকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটালাইজ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষাকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটালাইজ করার বিকল্প নেই এবং প্রাথমিক স্তর থেকেই তা শুরু করতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে এটি আরো ব্যাপকভাবে অনুভূত হয়েছে যে শিক্ষাকে ডিজিটালে রূপান্তরের বিকল্প নেই।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে, অ্যাপটিতে রয়েছে দ্বিতীয় থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর জন্য অধ্যায়ভিত্তিক পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ। ডিজিটাল লাইব্রেরির গ্রাহক হয়ে বই পড়ার সুযোগ। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই এবং টেক্সট টু স্পিচ প্রযুক্তির মাধ্যমে বই পড়ে শোনানোর ব্যবস্থা। অ্যাপটি থেকে পরীক্ষায় অংশ নিলে কিছু সময়ের জন্য শিশুতোষ গেম খেলার সুযোগ মেলে। ই-কমার্স থেকে বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক খেলনাসহ ডিজিটাল ক্লাসরুমের সামগ্রী কেনার ব্যবস্থা আছে। অভিভাবকদের জন্য আছে শিক্ষার্থীর অগ্রগতি দেখার সুবিধা ও অন ডিমান্ড প্রিন্ট।

শিশুদের উপযোগী উপকরণ না থাকায় তারা টিভি কিংবা কম্পিউটার গেম অথবা ইউটিউব বা ফেসবুকে আসক্ত হয়ে পড়ে জানিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘কাগজের বইয়ের পাতা তারা উল্টাতে চায় না। নতুন প্রজন্মের জন্য উপযোগী ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি যত ব্যয়বহুলই হোক, বাণিজ্যিক বিষয়টি বিবেচনা না করে শিশুদের উপযুক্ত মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি প্রকাশনা শিল্প ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বইঘরের ভার্সন ৬.০-এ থাকছে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য অধ্যায়ভিত্তিক অ্যাসেসমেন্ট দেওয়ার সুযোগ। ডিজিটাল লাইব্রেরির গ্রাহক হওয়ার মাধ্যমে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে যেকোনো বই ১০ দিনের জন্য পড়ার সুযোগ। আর যোগ হচ্ছে টেক্সট টু স্পিচ টেকনোলজির মাধ্যমে বই পড়ে শোনানোর ব্যবস্থা।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল হোসেন, প্রথম আলোর যুব কার্যক্রমের প্রধান মুনির হাসান, বেসিস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর, বেসিসের সহসভাপতি শোয়েব আহমেদ, বিসিএস প্রেসিডেন্ট শহীদ উল মুনির, পাখি ও বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ আ ন ম আমিনুর রহমান, বইঘরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাসান উজ জামান, পরিচালক মুনির আহমেদ, পাখি ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ এবং গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি টিচিং হসপিটালের পরিচালক ড. আ ন ম আমিনুর রহমান প্রমুখ।