কলম্বো টেস্ট
ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কায় বাংলাদেশ

প্রথম ইনিংসে যেখানে শেষ করেছিল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ইনিংসে ঠিক সেখান থেকেই শুরু করলো। একের পর এক উইকেট বিলিয়ে লিখলো আরেকটি বিপর্যয়ের গল্প। আগেরদিন লঙ্কানদের ব্যাটিং ইনিংসে ব্যাটিং সহায়ক কলম্বোর উইকেট রাতারাতি বদলে গেল। বাংলাদেশের জন্য হয়ে উঠল মরণ ফাঁদ। লঙ্কানদের স্পিন বিষে নীল হয়ে ফিরেছেন মুমিনুল-শান্ত-মুশফিকরা। এতে হারের ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা জেগে বসেছে বাংলাদেশ শিবিরে।
আজ শুক্রবার (২৭ জুন) ২১১ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১১৫ রান তুলতে পেরেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এখনো পিছিয়ে আছে ৯৬ রানে। ৩৯ বলে ১৩ রানে অপরাজিত আছেন লিটন দাস। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৫৮ রান করে শ্রীলঙ্কা।
নির্বাচকরা যে সুযোগ দিয়েছিল ওপেনার এনামুল হক বিজয়কে তিনি যেনো সেটাকে পায়ে ঠেলে সরালেন। লঙ্কানদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টানা ৪ ইনিংসে ব্যর্থ তিনি। এবার ফিরেছেন মোটে ১৯ রান করেই। এতে ভাঙে ৩১ রানের ওপেনিং জুটি। ঠিক তার চার বল পরেই ফেরেন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম। ২৪ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১২ রান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে একটু আশা দেখাচ্ছিলেন তিন নম্বরে নামা মুমিনুল আর অধিনায়ক শান্ত। কিন্তু সেটার স্থায়িত্ব ছিল মোটে ৬৮ বল। ৩৩ বলে ১৫ রান করে মুমিনুল বিদায় নিলে ভাঙে ৩৮ রানের জুটি। একট পরে একই পথে হেঁটেছেন শান্তও। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি করেছেন ৪৮ বলে ১৯ রান।
লিটন-মুশফিকের পঞ্চম উইকেট জুটিতে তৃতীয় দিন পার করে দেওয়ার স্বপ্ন বুনছিল অনেকে। কিন্তু শেষ বিকেলে তাদের হতাশ করে ফিরেছেন মুশফিক। জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন তিনি। ফেরার আগে ৫৩ বলে ২৬ রান করেছেন মুশি।
এরপর দিনের বাকি সময় পার করার দায়িত্ব পড়েছিল লিটন আর মেহেদী হাসান মিরাজের কাঁধে। দুজন এগোচ্ছিলেন ঠিকভাবেই। কিন্তু দিনের শেষ বলে রত্নায়াকের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে আউট হন মিরাজ। ফেরার আগে ১৬ বলে ১১ রান করেন তিনি। অপরাজিত আছেন লিটন দাস।
এর আগে ২ উইকেটে ২৯০ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। আগেরদিনের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে এ দিন অবশ্য দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। দিনের ষষ্ঠ ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন তাইজুল ইসলাম। ১৫০ ছাড়িয়ে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে হাঁটা নিশাঙ্কাকে ফেরান বাঁ-হাতি এই স্পিনার। এনামুল হক বিজয়ের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১৫৮ রান করেন নিশাঙ্কা।
পরের ওভারে ফিরেই আবারো লঙ্কান শিবিরে আঘাত হানেন তাইজুল। এবার ফেরান অধিনায়ক ধনাঞ্জয়াকে। ফেরার আগে ১০ বলে ৭ রান করতে পারেন তিনি। আগেরদিন নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে আসা প্রবাথ জয়সুরিয়াকেপেস আগুনে পুড়িয়েছেন নাহিদ রানা। তিনি ফিরেছেন ৩৯ বলে ১০ রানে।
এরপর অবশ্য প্রায় অর্ধশত রানের একটি জুটি গড়েন দুই মেন্ডিস মিলে। ৩৩ রান করা কামিন্দু মেন্ডিসকে ফিরিয়ে ৪৯ রানের সেই জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান। মধ্যাহ্ন বিরতির পরে দ্বিতীয় ওভারেই সোনাল দিনুশাকে ফেরান নাঈম। ফেরার আগে ১৬ বলে ১১ রান করেন তিনি। এরপর থারিন্দু রত্নায়াকেকেও উইকেটে দাঁড়াতে দেননি তাইজুল। ২০ বলে ১০ রান করে এনামুল হক বিজয়ের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
উইকেট কামড়ে সেঞ্চুরির পথে থাকা কুশাল মেন্ডিস দুই রান নিতে গিয়ে গড়বড় করে ফেরেন রান আউট হয়ে। ফেরার আগে ৮৪ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেন তিনি। সেই ওভারের পঞ্চম বলে আসিথা ফার্নান্দোকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের ইনিংসের পরিসমাপ্তি টেনে দেন তাইজুল। পূরণ করেন ফাইফার।