‘আমড়া কাঠের ঢেঁকি ওয়ার্নার ছিল ক্লাসের সং’

পড়াশোনায় একেবারেই মনোযোগ ছিল না তাঁর। স্কুলের শিক্ষক রেগেমেগে রিপোর্ট কার্ডে লিখে দিয়েছিলেন, ‘সে শুধু সং সাজতে চায়। কোনো কাজের না এবং বড় হয়ে কিছুই করতে পারবে না।’ এমন কঠোর ভবিষ্যদ্বাণীও করেছিলেন সেই শিক্ষক। কিন্তু সেটা সত্যি হয়নি। সেই দুষ্টু শিক্ষার্থীটিকে এখন এক নামেই চেনে ক্রীড়াবিশ্ব। বড় হয়ে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এ সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ও অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়ক হিসেবে। হ্যাঁ, বলা হচ্ছে ডেভিড ওয়ার্নারের কথা।
সম্প্রতি বাড়ির জিনিসপত্র সরাতে গিয়ে স্কুলের এই রিপোর্ট কার্ডটি খুঁজে পেয়েছেন ওয়ার্নার। ২০০৪ সালের এই রিপোর্ট কার্ডটি ছিল তাঁর দ্বাদশ শ্রেণির। সে সময় স্কুলের পড়াশোনার চেয়ে ক্রিকেট মাঠের দিকেই বেশি মনোযোগ ছিল অস্ট্রেলিয়ার এই ক্রিকেটারের। রিপোর্ট কার্ডটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার দেওয়ার সময় সে কথা নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন ওয়ার্নার। ছবিটির ক্যাপশন হিসেবে লিখেছেন, ‘এই শিক্ষক আমাকে বলেছিলেন যে, তুমি বড় হয়ে কোনো কিছুই ভালোভাবে করতে পারবে না। আমি যেটা সবচেয়ে ভালো পারতাম, সেটাই অনুশীলন করে গেছি। আর সেটা ছিল ক্রিকেট।’ সত্যিই সেই শিক্ষক হয়তো ক্রিকেট মাঠে কখনো দেখেননি ওয়ার্নারকে। না হলে এমন মন্তব্য তাঁর করার কথা না।
অস্ট্রেলিয়ার ১৩২ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ার্নারই প্রথম খেলোয়াড়, যিনি একটিও ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ না খেলে সরাসরি সুযোগ পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। ২০০৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলার পর অল্প সময়ের মধ্যেই নির্বাচকদের নজর কেড়েছিলেন ওয়ার্নার। ২০০৯ সালে মাত্র ২৩ বয়সেই তাঁর অভিষেক হয়ে যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেই খেলেছিলেন ৪৩ বলে ৮৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। তার পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি এই বাঁহাতি ওপেনারকে। ২০১৫ সালে তাঁকে দেওয়া হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব।
ভারতের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা আইপিএলে অধিনায়ক হিসেবেও দারুণ সফল ওয়ার্নার। এবারের মৌসুমে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার। তিনিই করেছেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১৫ রান। ১১ ম্যাচ শেষে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে তাঁর দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।