কান ধরে গোল উদযাপন, রহস্য কী?
ইউরো ২০২০-এর বাছাইপর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড ও মন্টেনিগ্রো। গত মঙ্গলবার রাতে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটা ৫-১ গোলে অনায়াসে জিতে নেয় ইংলিশরা। দলের হয়ে রস বার্কলের জোড়া গোলের পাশাপাশি গোলদাতার তালিকায় ছিলেন মাইকেল কিন, হ্যারি কেইন ও রহিম স্টার্লিং। ম্যাচের অন্য সব ঘটনা আর বাকি গোলদাতাদের ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছে ইংলিশদের হয়ে সর্বশেষ গোল করা স্টার্লিংয়ের গোল উদযাপন।
ম্যাচের ৮০ মিনিটে গোল করেই গোলবারের পাশে দৌড়ে যান স্টার্লিং। গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের দিকে তাকিয়ে দুই হাতে নিজের কান ধরেন এই ফরোয়ার্ড। গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের আচরণে অসন্তুষ্ট স্টার্লিং কিছু একটা বোঝাতে চেয়েছিলেন। ম্যাচের পর ম্যানসিটির এই তারকা ফরোয়ার্ড নিজেই নিশ্চিত করেছেন এমন উদযাপনের রহস্য। জানা গেছে, গ্যালারি থেকে দর্শকদের করা বর্ণবাদী আচরণের জবাব দিতেই এভাবে গোল উদযাপন। এই আধুনিক যুগে এসেও বর্ণবাদের ধ্যানধারণা পোষণকারীদের গোল করে নিস্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন, জানিয়েছেন স্টার্লিং।
মন্টেনিগ্রোর সঙ্গে পুরো ম্যাচজুড়ে বর্ণবাদী দুয়ো শুনতে হয়েছে ইংল্যান্ডের অশ্বেতাঙ্গ ফুটবলারদের। ইংলিশ খেলোয়াড় ড্যানি রোজকে হলুদ কার্ড দেখানোর পর গ্যালারি থেকে ভেসে আসে বানরের ডাক। তাই গোল করার পর গ্যালারির দিকে কান বাড়িয়ে কিছু বলার আহ্বান জানিয়ে তার দাঁতভাঙা জবাব দেন স্টার্লিং। গোল উদযাপনের সেই ছবিটা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট করে ইংলিশ ফরোয়ার্ড লিখেছেন, ‘হিংসা ছড়ানো বর্ণবাদীদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার সেরা উপায়।’
একুশ শতকে এসেও বর্ণবাদের বিষ যারা ছড়িয়ে যাচ্ছে, তাদের উদ্দেশে স্টার্লিং বলেছেন, ‘এসব করে আমাদের থামানো যাবে না। নিজেদের গায়ের বর্ণ আমাদের জানা আছে। ২০১৯ সালে এসেও বর্ণবাদ নিয়ে কথা বলাটা লজ্জাজনক। আমরা শুধু এ নিয়ে সচেতনতাটুকুই বাড়াতে পারি। কিন্তু এর শেকড় উপড়ে ফেলতে আরো শক্ত পদক্ষেপ প্রয়োজন। কোনো একজনকে জরিমানা করলে ছবিটা বদলাবে না। বর্ণবাদী সমর্থকদের দলকে যদি দর্শকশূন্য মাঠে খেলানো যায়, সেক্ষেত্রে হয়তো এমন কিছু করার আগে তারা দু’বার ভাববে।’