আলঝেইমারে আক্রান্ত গার্ড মুলার

খেলোয়াড়ি-জীবনে জার্মানরা তাঁকে ডাকত ‘ডেয়ার বম্বার’। মানে জাতীয় বোমারু বিমান। গোল করার অসাধারণ দক্ষতার জন্যই এমন নাম হয়েছিল গার্ড মুলারের। জার্মানদের প্রিয় ‘বোমারু বিমান’ আজ স্তব্ধ, আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত।
স্মরণশক্তি লুপ্ত হওয়া, সঠিক কথা মনে না আসা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি আলঝেইমার রোগের লক্ষণ। সাধারণত প্রবীণরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আগামী ৩ নভেম্বর ৭০ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া মুলারকে নিয়ে তাই দুশ্চিন্তায় জার্মানরা।
গার্ড মুলারের প্রসঙ্গ উঠলেই ফুটবলপ্রেমীদের মনে ভেসে ওঠে গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের কথা। ১০ গোল করে ১৯৭০ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন মুলার। চার বছর পর স্বদেশে আয়োজিত বিশ্বকাপে করেছিলেন চার গোল। ফাইনালে ইয়োহান ক্রুইফের নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পশ্চিম জার্মানির জয়সূচক গোলটি এসেছিল মুলারের পা থেকে। ১৪ গোল নিয়ে দীর্ঘদিন বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড নিজের মুঠোয় রেখেছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে যা ভেঙে দেন ব্রাজিলের রোনালদো। ১৯৭২ সালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও পশ্চিম জার্মানির শিরোপা জয়ে বিশাল অবদান ছিল মুলারের। ফাইনালে দুটোসহ মোট চার গোল করে টুর্নামেন্টের সেরা গোলদাতা হয়েছিলেন তিনি।
জার্মানির সেরা ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের পক্ষেও অনেক সাফল্য আর অর্জনে উদ্ভাসিত মুলার। বায়ার্নে ১৫ মৌসুম খেলে ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত টানা তিনবার ইউরোপিয়ান ক্লাব কাপে (বর্তমানে চ্যাম্পিয়নস লিগ) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধুর স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি। ব্যাভারিয়ানদের জার্সি গায়ে তাঁর গোল-সংখ্যা অবিশ্বাস্য, ৫৩৩টি!
মুলারের অসুস্থতার দুঃসংবাদে বায়ার্নের খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা স্বাভাবিকভাবেই মর্মাহত। তাঁদের কষ্ট প্রতিধ্বনিত হয়েছে আশির দশকের তারকা ও বর্তমান সভাপতি কার্ল-হাইঞ্জ রুমেনিগের কণ্ঠে, ‘গার্ড মুলার ফুটবল-ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। তাঁর গোল ছাড়া বায়ার্ন মিউনিখ আর জার্মানি বর্তমান অবস্থায় আসতে পারত না।’