গত মে মাস থেকে দুর্নীতি আর অনিয়মের অভিযোগে তোলপাড় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় ফিফার সাত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে। এর পর সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার সদর দপ্তরে তল্লাশি চালায় সুইস পুলিশ। গত মাসে ফিফার মহাসচিব জেরোম ভালকে বরখাস্ত হয়েছেন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে। এবার তদন্ত শুরু হয়েছে ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে। এই অভিজ্ঞ ফুটবল প্রশাসকের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার ফিফার স্পন্সররা। তবে ব্ল্যাটারের মেয়ে কোরিনের দাবি, তাঁর বাবা গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার।

একসময় ব্ল্যাটারের পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করতেন কোরিন। কর্মক্ষেত্রে খুব কাছ থেকে দেখার সুবাদে বাবার সততা নিয়ে তিনি গর্বিত। ১৯৯৮ সাল থেকে ফিফা সভাপতির দায়িত্ব পালন করে চলা ব্ল্যাটারের ভাবমূর্তি ধ্বংসের জন্য গণমাধ্যমের দিকে অভিযোগের আঙুল কোরিনের। রোববার সুইস পত্রিকা ‘ব্লিক’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘গণমাধ্যম তাঁর (ব্ল্যাটার) ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। কেন তারা তাঁর পেছনে লাগল? তিনি তাদের কী ক্ষতি করেছেন? আমি জানি না। শুধু হিংসা নয়, বিদ্বেষ থেকে এটা করা হচ্ছে।’

ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে ব্ল্যাটারের নাম। গত মে মাসে টানা পঞ্চমবারের মতো ফিফা সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার ঠিক চার দিন পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ফিফার পরবর্তী সভাপতি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত অবশ্য দায়িত্ব পালন করবেন এই সুইস।

কিন্তু গত মাসে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তদন্ত শুরু হওয়ায় এ মুহূর্তে ভীষণ চাপের মুখে ব্ল্যাটার। গত ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে প্রায় আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সুইজারল্যান্ডের তদন্তকারী কর্মকর্তারা। এ নিয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ কোরিন ব্ল্যাটার, ‘তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠায় আমি খুবই অবাক হয়েছি। আমার বাবা কোনো অপরাধী নন। আমি তো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম যে, তাঁকে হয়তো হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’

আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ফিফার বিশেষ সভাপতি নির্বাচন। কোরিন পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘কোনো পরিস্থিতিতেই’ তাঁর বাবা আবার সভাপতি হতে চান না। অবশ্য ততদিন পর্যন্ত ব্ল্যাটারই ফিফা সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।

যদিও ফুটবল-বিশ্বের অনেকের ধারণা, কিছুদিনের মধ্যেই ব্ল্যাটারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। এরই মধ্যে ব্ল্যাটারের অপসারণের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ফিফার চার স্পন্সর কোকাকোলা, ভিসা, ম্যাকডোনাল্ডস ও বাডভাইজার।