ক্ষুব্ধ সুজন ক্রিকেটের সঙ্গে থাকতেই চাচ্ছেন না!
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে খুবই বাজেভাবে। স্বভাবতই টিম ম্যানেজমেন্টকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে। আর তা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহটাই নাকি হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
ত্রিদেশীয় সিরিজসহ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বাংলাদেশ দল পাচ্ছে না অন্য কোনো কোচ। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োজিত সুজনই বলতে গেলে কোচ হিসেবে কাজ করছেন। আজ সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের ওপর নিজের সব ক্ষোভ উগরে দিলেন সাবেক এই অধিনায়ক, ‘বাংলাদেশ হেরে যাওয়ার পরও আমি এই দেশে আছি সেটাই অনেক। চন্ডিকা (হাথুরুসিংহে) যখন ছিল তখনো হেরেছে বাংলাদেশ। অনেক বড় বড় কোচ এসেছে-গিয়েছে, ফলও খারাপ হয়েছে। এখনো ফল আমাদের বিপক্ষে যেতেই পারে, তা আমাদের মেনে নিতে হবে। অনেক কারণই থাকতে পারে এর পেছনে। তবে খারাপ হলে বোধহয় আমার ওপরই দোষটা বেশি আসে।’
নোংরামিতে ভরে গেছে উল্লেখ করে সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই আমি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করেছি। দেশের ক্রিকেটের জন্য নিঃস্বার্থভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। ক্রিকেট বোর্ডের থাকার পেছনে আমার কোনো স্বার্থ নেই। আমার একটুও আগ্রহ নেই থাকার। ক্রিকেট নোংরামিতে ভরে গেছে।’
শেষ টেস্টে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের জায়গায় দলে এসেছিলেন সাব্বির রহমান। অথচ আগের টেস্টে ৫৩ বলে ৮ রান করে দলের ড্রয়ে অবদান রেখেছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ যখন ঢাকায় ব্যস্ত টেস্টে, সৈকত তখন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে খেলছিলেন। আর এখানেই সুজনকে নিয়ে বিতর্ক ওঠে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দলের চেয়ে আবাহনী বা অন্য কিছু কখনোই আমার কাছে বেশি গুরুত্ব পায়নি, পাবেও না। এ ধরনের কথা শুনলে খারাপ লাগে। সৈকত বা আবাহনী- তা যদি বাংলাদেশ দলের হারের কারণ হয়, তবে ব্যাপারটা কঠিন হয়ে যায়। ওর পারফম্যান্স আমিও দেখেছি। ক্রিকেটীয় জ্ঞান আমারও আছে। অনেকদিন ধরেই তো ক্রিকেটের সঙ্গে আছি। দলের কখন কাকে দরকার, কী দরকার— আমরাও বুঝি সেটা। মনে হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছু করছি না।’
২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করছেন উল্লেখ করে সাবেক এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘যেভাবে আমার পেছনে লেগে আছে, ভালো কিছু করলেও তা কারো চোখে পড়বে না। আমি এত বছর ধরে কাজ করছি, কখনো শুনিনি ভালো কোনো কিছু আমি করেছি।’
দলের ব্যর্থতার কারণ সম্পর্কে সুজন বলেন, ‘কাচের ওই রুমের ভিতরে কী চলে সেটা কিন্তু বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারবে না। অনেক ধরনের পরিকল্পনাই দেওয়া হয় ড্রেসিংরুম থেকে। কিন্তু চাপের মধ্যে থাকলে বড় বড় ব্যাটসম্যানও ভুল করতে পারে। কিন্তু আমরা তা মেনে নিতে পারি না। মনে হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্বকাপজয়ী দল, আমাদের সব ম্যাচ জিততেই হবে। আসলে আমরা যারা কাজ করি, আমরাই জানি কাজটা কতটা কঠিন।’