বিপিএলে পাঁচে পাঁচ দেশি বোলাররা
ক্রিকেট বিশ্বে অন্য বড় দলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া, ভারত-ইংল্যান্ডের মতো দলগুলোও এখন টাইগারদের এখন সমীহ করে। ক্রিকেটীয় এই উন্নতির মূলে রয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জমজমাট এই আসরের ছোঁয়ায় বদলে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের হাল। প্রতিবছরই এই আসর থেকে উঠে আসছে একের পর এক দেশি ক্রিকেটার।
বিপিএলের পূর্ববর্তী আসরগুলোতে বিদেশিদের একচ্ছত্র আধিপত্য দেখা গিয়েছিল। তবে এবারের চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। বিদেশি ক্রিকেটারদের চেয়ে এবার দেশি ক্রিকেটাররা আলো ছড়িয়েছে বিপিএলে। এবারের আসরে সেরা পাঁচ বোলারের সবাই বাংলাদেশের।
এবার বিপিএলের প্রথম পর্বটি বসেছিল সিলেটে। প্রথম পর্ব থেকেই প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকে টাইগার বোলাররা। ঢাকা ও চট্টগ্রাম-পর্ব শেষেও বোলারদের তালিকার শীর্ষস্থানগুলো দখল করে রেখেছে দেশি বোলাররা।
৯ ম্যাচ থেকে ১৫ উইকেট নিয়ে বোলারদের তালিকায় প্রথম নামটি খুলনা টাইটানসের বোলার আবু জায়েদ রাহির। এবারের আসরে খুলনার জয়ের অন্যতম প্রধান নায়ক এই বোলার। গত আসরেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন এই বোলার। ৮ ম্যাচে নিয়েছিলেন নয় উইকেট। তার চেয়ে বড় কথা হলো, প্রতি ম্যাচে মাত্র ৫.২৫ ওভার রান দিয়েছিলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের এই বোলার। রাহি এবার খুলনায়। ওভারপ্রতি রান কিছুটা বেশি দিলেও প্রতি ম্যাচেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি উইকেট নিয়েছেন।
তালিকার দ্বিতীয় নামটি সাকিব আল হাসানের। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার ৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ১৬ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। এটি এখন পর্যন্ত এবারে আসরে সেরা বোলিং ফিগার। এবারের বিপিএলে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে রয়েছে চিটাগং কিংস। সতীর্থরা হতাশ করলেও তাসকিন আহমেদ নিজের সুনাম ধরে রেখেছেন। ৯ ম্যাচে তাসকিনও নিয়েছেন ১৩ উইকেট।
২০১৫ সালের আসরে চমক দেখানো আবু হায়দার রনি গত আসরে ছিলেন একবারে অকার্যকর। তবে আবার পাদপ্রদীপের আলোয় ফিরেছেন এই বাঁ-হাতি পেসার। এবারের আসরে চতুর্থ সেরা উইকেট সংগ্রাহক ঢাকা ডায়নামাইটসের এই বোলার। ৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১২ উইকেট। তালিকার পঞ্চম নামটি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের। তিনিও ১২ উইকেট পেয়েছেন। ব্যাটে-বলে কুমিল্লার ভিক্টোরিয়ান্সের সবচেয়ে সেরা নায়ক এই সাইফুদ্দিন।
সেরা দশে রয়েছেন আরো দুজন টাইগার বোলার। ৮ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছেন শফিউল ইসলাম। আর ১০ উইকেট নিয়ে দশম স্থানে রয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে একটা জায়গায় সবার চেয়ে এগিয়ে ম্যাশ। বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম রান (৬.৮০) দিয়েছেন দেশসেরা এই পেসার। সেরা দশে তাঁর চেয়ে কম রান দিয়েছেন কেবল দুজন। মোহাম্মদ সামি (৬.০৩) ও শহীদ আফ্রিদি (৬.৭৮)। সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া টাইগার বোলারদের মধ্যে রয়েছেন আবুল হাসান রাজু (১০), সানজামুল ইসলাম (১০), রুবেল হোসেন (৮), আল আমিন হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ (৭)।
বিদেশি বোলারদের মধ্যে এবার সবচেয়ে বিশি উইকেট নিয়েছেন শহীদ আফ্রিদি (১১), মোহাম্মদ সামি, ডোয়াইন ব্রাভো ও জেমস ফ্রাঙ্কলিন (১০), সুনিল নারাইন ও থিসারা পেরেরা (৯)। এর আগে প্রতিটি আসরেই সর্বোচ্চ উইকেট-শিকারি বোলারদের তালিকায় বিদেশি বোলারদের আধিপত্য ছিল। গত আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছিলেন কেভন কুপার (২২), ২০১৫ সালে এই তালিকায় সবার ওপরের নামটি ছিল ডোয়াইন ব্রাভো (২১), ২০১৩ সালে আলফানসো থমাস (২০) ও ২০১২ সালের প্রথম আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সামি (১৭)।
বিপিএলের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশি বোলাররাও নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করছেন। আসরের শেষ পর্বে বিস্ময়কর কিছু না ঘটলে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের তালিকায় শীর্ষ নামগুলো বাংলাদেশি বোলারদেরই হবে।