বিপিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী
শুরুতেই টপ অর্ডারদের ব্যর্থতা। ৫২ রানের ইনিংসে দলকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন শামসুর রহমান। কিন্তু শান্ত-মুশফিকদের ব্যর্থতার দিনে পারলেন না তিনিও। ফলে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনালে খুলনা টাইগার্সকে ২১ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল আন্দ্রে রাসেলের রাজশাহী রয়্যালস।
তাই নতুন চ্যাম্পিয়ন পেল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। এর আগে ২০১৬ সালেও ফাইনালে উঠেছিল রাজশাহী। সেবার ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে হেরে শিরোপা স্বপ্ন ভেঙে ছিল তাদের। আগের ছয়বারের তিনবারই জিতেছে ঢাকা, দুইবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও একবার জিতেছে রংপুর রাইডার্স। এবার নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মুকুট উঠল রাজশাহীর মাথায়।
আজ শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে চার উইকেটে ১৭০ রান করে রাজশাহী রয়্যালস। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৪৯ রানে থামে খুলনা টাইগার্সের ইনিংস।
এদিন শিরোপা জয়ের মঞ্চে টস জিতে রাজশাহীকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান খুলনা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। আগে ব্যাট করতে নেমেই শুরুতেই হোঁচট খায় রাজশাহী। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে হারায় ওপেনার আফিফ হোসেনকে। ১৪ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি।
আফিফ ফিরলে রানের গতি বাড়াতে পারেননি ডানহাতি ওপেনার লিটন দাস। তবে তিনে ব্যাট করতে নামা ইরফান শুক্কুর দারুণভাবে টেনেছে দলকে। পাওয়ার প্লে-এর প্রথম ছয় ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৩ রান করে রাজশাহী।
ইনিংসের দশম ওভারে লিটনকে হারায় রাজশাহী। ধীর গতিতে খেলা লিটন ২৮ বল খেলে করেন মাত্র ২৫ রান। ছন্দে থাকা শোয়েব মালিকও টিকতে পারেননি। ১৩ বল মোকাবিলা করে ৯ রান করে ফেরেন তিনি। এর মধ্যে ৩০ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন শুক্কুর। তবে হাফসেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ৩৫ বলে ৫২ রান করলে তাঁকে ফেরান মোহাম্মদ আমির। দলীয় ৯৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় রাজশাহী।
এরপর নেওয়াজের সঙ্গে জুটি বাধেন আগের ম্যাচে ঝড় তোলা আন্দ্রে রাসেল। তবে এদিন বেশি আক্রমণাত্মক হতে পারেননি রাজশাহী অধিনায়ক। বরং ঝড় তুলেছেন নেওয়াজ। মাত্র ২০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। তাতে নির্ধারিত ওভারে ১৭০ রান সংগ্রহ করে রাজশাহী। ১৬ বলে ২৭ রান করেছেন রাসেল।
খুলনার হয়ে বল হাতে ৩৫ রান দিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির। একটি করে নেন রবি ফ্রাইলিঙ্ক ও শহিদুল ইসলাম।
১৭১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় খুলনা টাইগার্স। রানের খাতা খোলার আগেই হারায় ছন্দে থাকা ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে। পরের ওভারে মেহেদী মিরাজকে সাজঘরে পাঠান আবু জায়েদ রাহি। শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়া খুলনার হাল ধরেন শামসুর রহমান ও রাইলি রুশো। দুজন মিলে ১০তম ওভার পর্যন্ত নিয়ে যান খুলনাকে। ১০.৫তম ওভারে রুশোকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ নেওয়াজ। ৭৪ রানে ভাঙে খুলনার দ্বিতীয় উইকেট জুটি।
এর মধ্যে ৩৮ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন শামসুর রহমান। তবে ৫০ এর ঘর পার করার পর বেশিক্ষণ টিকেননি তিনি। ১৩.১ তম ওভারে শামসুরকে বিদায় করেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। ৪৩ বলে ৫২ রান করে ফেরেন তিনি। বেশিক্ষণ টেকেননি জাদরানও। দ্রুত উইকেট হারানোর চাপ একা আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি খুলনা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ২১ রান করে ফিরে যান অধিনায়কও। এরপর নিয়মিত উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ওভারে শেষ পর্যন্ত ১৪৯ থেমে যায় খুলনা টাইগার্স।
রাজশাহী রয়্যালস : ২০ ওভারে ১৭০/৪ ( লিটন ২৫, আফিফ ১০, শুক্কুর ৫২, মালিক ৯, রাসেল ২৭, নেওয়াজ ৪১ ; আমির ৪-০-৩৫-২, ফ্রাইলিঙ্ক ৪-০-৩৩-১, তানভীর ১-০-১১-০, শফিউল ৪-০-৩৮-০ মিরাজ ৩-০-২৭-০, শহীদুল ৪-০-২৩-১) ।
খুলনা টাইগার্স : ২০ ওভারে ১৪৯/৮ (শান্ত ০, মিরাজ ২, শামসুর ৫২, রুশো ৩৭, মুশফিক ২১, জাদরান ৪, ফ্রাইলিঙ্ক ১২, শহিদুল ০, শফিউল ৭, আমির ১; ইরফান ৪-১-১৮-২, রাহী ২-০-২৪-১, রাসেল ৪-০-৩২-২ , মালিক ২-০- ১৫-০, নেওয়াজ ৪-০-২৯-১, রাব্বি ৪-০-২৯-২) ।
ফল : ২১ রানে জয়ী রাজশাহী কিংস।