তিন দিনেই উড়ে গেল বাংলাদেশ
চলমান ভারত সফরের প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতে দারুণ আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা নিরাশায় পরিণত হয়। ক্রমেই ফুটে ওঠে ব্যর্থতা। শেষ দুটি টি-টোয়েন্টিতে হারের পর সাদা পোশাকে বাংলাদেশের অবস্থা হয়েছে আরো করুণ। ব্যাটে-বলে চরম ব্যর্থতা দেখিয়ে ইন্দোর টেস্টে ভারতের কাছে ইনিংস ও ১৩০ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।
এই জয়ের মাধ্যমে ৩০০ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান মজবুদ করল বিরাট কোহলির দল। সিরিজের শেষ ম্যাচে আগামী ২২ নভেম্বর আবারও ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে ম্যাচটি হবে দিবা-রাত্রির।
ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং কোনো বিভাগেই ভারতের বিপক্ষে ন্যূনতম লড়াই করতে পারেননি মুমিনুল, ইমরুল, সাদমানরা। দেখিয়েছেন শুধু ব্যর্থতা। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ইন্দোরে ভারতের সামনে কাঁপাছিল বাংলাদেশ। অথচ টেস্টের টস জিতে ব্যাটিংয়ের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুমিনুল হক। উইকেটে ঘাস আছে শুরুটা কঠিন হবে, তবে ধীরে ধীরে ব্যাটিংটা সহজ হবে সব জেনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
তবে কঠিন সময়ে উইকেট বিলিয়েছেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। ভারতীয় পেসে রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে একে একে সাজঘরের পথ ধরেছেন তারা। প্রথম দিনেই মাত্র ১৫০ রানে বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দেয় ভারত। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস আসে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। বাকিদের মধ্যে ছয়জনই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি।
বিপরীতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ব্যাটিং শিখিয়েছে ভারত। শুরুতে আবু জায়েদ রাহির বলে রোহিত শর্মা ফিরলেও আরেক ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে ছেড়েছেন। ক্যারিয়ারের অষ্টম ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ২৪৩ রানে থামেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। মায়াঙ্কের সঙ্গে ছন্দশীল ব্যাটিং করেন চেতেশ্বর পুজারা (৫৪), অজিঙ্কা রাহানে (৮৬) ও যাদেজা (৬০)। বাংলাদেশি বোলাররা কোনো রকম পরীক্ষায়ই ফেলতে পারেননি তাদের। একমাত্র রাহি বল হাতে সাফল্য পেয়েছেন। তুলে নিয়েছেন চারটি উইকেট। বাকিদের নখদন্তহীন বোলিংয়ের সঙ্গে ক্যাচ মিসের মহড়াতে ৩৪৩ রানের লিডসহ (৪৯৩ রানে) দিন শেষ করে ভারত। তৃতীয় দিন আজ শুক্রবার ৩৪৩ রানের লিডেই ইনিংস ঘোষণা করে ভারত।
ভারতের বিশাল লিডের বিপরীতে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আবারও অসহায় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের মতো শুরুতে ফিরে যান দুই ওপেনার। অবাক করার বিষয় হলো, দুই ওপেনার ইমরুল-সাদমান দুজনেই আগের ইনিংসের মতো ছয় রানে আউট হন। ইনিংসের শুরুতে মাত্র ছয় রানে উমেশ যাদবের বলে বোল্ড হন ইমরুল। এর আগে প্রথম ইনিংসেও ছয় রানে যাদবের বলেই সাজঘরে ফিরেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
ইমরুলের পর আগের ইনিংসের মতো একই বোলার ইশান্ত শর্মার বলে কাটা পড়েন সাদমান ইসলাম। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ২৪ বলে ছয় রানে আউট হন তিনি। এরপর একে একে ফিরে যান মোহাম্মদ মিঠুন, অধিনায়ক মুমিনুল হক, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহরা।
স্রোতের বিপরীতে শুধু লড়াই করেছেন মুশফিক। প্রথমের ইনিংসের মতো চেষ্টা করেছেন উইকেটে টিকে থাকতে। তাঁর প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৩ রান সংগ্রহ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ৬৪ রান করে আউট হন মুশফিক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন মিরাজ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের পক্ষে বল হাতে চার উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি। ইশান্ত শর্মা নেন এক উইকেট। উমেশ যাদব নেন দুই উইকেট। আর অশ্বিন নেন তিনটি উইকেট।