এক নজরে দেখে নিন মানিকের ২১ দফা ইশতেহার
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সভাপতি পদপ্রার্থী শফিকুল ইসলাম মানিক। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর এক হোটেলে ২১ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
এক নজরে দেখে নিন মানিকের ২১ দফা ইশতেহার :
১. নির্বাচিত ২১ জন সদস্যকেই এক মনে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। এক কথা ও কাজের মধ্যে কোনো দ্বিমত থাকবে না। ওয়ান টিম নীতিতে কাজ করার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
২. জেলা ফুটবল, পাইওনিয়ার লিগ, প্রথম বিভাগ, চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ ও টুর্নামেন্টগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আয়োজন করার জন্য একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলকে আরো জনপ্রিয় করতে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় পর্যায়ের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হবে। করপোরেট দল, সার্ভিসেস দল এবং সাংবাদিক সংস্থাগুলোকে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনে উৎসাহিত ও সহযোগিতা করা হবে।
৪. আন্তস্কুল, আন্তকলেজ ফুটবল যথাযথভাবে হচ্ছে কি না, তা বাফুফের নজরদারিতে থাকবে এবং আন্তশিক্ষা বোর্ড ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করার জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোকে উৎসাহিত করা হবে।
৫. প্রতিটি ক্লাবের অনুশীলনের জন্য মাঠের ব্যবস্থা করা হবে। এর জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।
৬. জাতীয় পর্যায়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বঙ্গবন্ধু কাপ প্রতি বছর আয়োজন করা হবে। অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় ফুটবলের নামকরণ লে. শেখ জামাল অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং অনূর্ধ্ব-১৯ সোহরাওয়ার্দী কাপ জাতীয় যুব ফুটবল, আন্তজেলা শেরেবাংলা জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন আবার চালু করা হবে।
৭. বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টকে আরো আকর্ষণীয় করতে প্রতি দুই বছর পর আয়োজন করা হবে এবং শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ প্রতি বছরই অনুষ্ঠিত হবে। দুটি টুর্নামেন্টই বাৎসরিক ক্যালেন্ডার সূচিতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
৮. প্রতি বছর একটি গ্রহণযোগ্য এবং বাস্তবায়নযোগ্য ক্যালেন্ডার থাকবে যা আগেই প্রকাশিত হবে। প্রতি বছর বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
৯. সাধারণ সভায় জেলা ও বিভাগীয় ফুটবলকে উৎসাহিত করার জন্য সাধারণ সভায় প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে প্রতি বছর একটি বিভাগ ও চারটি জেলাকে।
১০. বাফুফের আর্থিক অনিয়ম এবং পাতানো ম্যাচের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা তৈরি এবং এ ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।
১১. বাফুফের নির্বাচিত সব সদস্যের বাফুফে ভবনে গিয়ে কাজে মনযোগ বৃদ্ধি ও সহায়তার জন্য প্রত্যেক সদস্যের চেয়ার, টেবিল, কম্পিউটার থাকবে এবং ডেলিগেটদের জন্য বাংলাদেশের যেকোনো স্টেডিয়ামে ভিআইপি মর্যাদার একটি কার্ড দেওয়া হবে, যাতে ডেলিগেটরা ফুটবল খেলা দেখতে পারে। তা ছাড়া ফেডারেশনে যাওয়ার জন্য একটি ছবিযুক্ত স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে।
১২. সভাপতি বছরে একবার পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় গিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নসহ জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা নিয়ে কীভাবে ফুটবলে আরো গতি আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করবেন।
১৩. সভাপতির আমন্ত্রণে পেশাদার দলগুলোর সভাপতিদের সঙ্গে প্রতি ছয় মাস পরপর আলোচনা সভা করা হবে। জেলার ফুটবলকে আরো আকর্ষণীয় করতে নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
১৪. জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সব খেলোয়াড় ও সাবেক সংগঠকদের প্রতি জেলায় এবং ঢাকার বিভিন্ন ফুটবল কর্মকাণ্ডে ভিআইপি মর্যাদা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।
১৫. বর্তমান জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের বেতন কাঠামো, ইনস্যুরেন্স সুবিধা দেওয়া হবে। দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই একটি আধুনিক জিম তৈরি করা হবে।
১৬. পেশাদার ফুটবল বছরে সাত-আট মাস মাঠে থাকবে। বাকি চার-পাঁচ মাস জেলা ফুটবল, জাতীয় লিগ/ টুর্নামেন্ট, বয়সভিত্তিক লিগ, নারী লিগ চালু থাকবে।
১৭. কোচেচ এডুকেশন বর্তমান ফুটবলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। সার্টিফিকেটধারী কোচরা যাতে কাজের সংস্থান পান, সে ব্যাপারে একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে।
১৮. রেফারিরা হচ্ছেন খেলার প্রাণ। তাঁরা মাঠে যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৯. পেশাদার প্রতিটি ক্লাবের অন্তত দুটি এজ গ্রুপ দল থাকে- এর নীতিমালা তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু/বঙ্গমাতা প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে বাছাইকৃত খেলোয়াড়দের নিয়ে পরিকল্পনা সাজানো হবে। ২০৩৩ সালে একটি শক্তিশালী অলিম্পিক দল গড়া হবে।
২০. বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের র্যাঙ্কিং বর্তমানে ১৮৭। ১২ বছর আগে র্যাঙ্কিং যেখানে ছিল, সেখানে ফিরে যাওয়া বা তার চেয়েও উন্নতি করার জন্য জাতীয় দলকে নিয়ে সেই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নারী ফুটবল দলের উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করা হবে।
২১. এই ইশতেহারের পরিকল্পনা একার পক্ষে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এ জন্য ১১ সদস্যের একটি উপদেষ্টা কমিটি করা হবে। সাত সদস্যের রিসার্চ সেল থাকবে।