ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে নাজমুলের কাছে মাহমুদউল্লাহর হার
অনেকটা হাকডাক দিয়েই শুরু হয়েছে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ। তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় নাজমুল একাদশ ও মাহমুদউল্লাহ একাদশ। তবে খুব একটা উজ্জ্বল ছিলেন না তারকা ব্যাটসম্যানরা। লো স্কোরিং ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে মোটামুটি সফল বোলাররা। রান পেয়েছেন তরুণ ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর ও তৌহিদ হৃদয়। দুই তরুণে ভর করে মাহমুদউল্লাহ একাদশকে চার উইকেটে হারিয়েছে নাজমুল একাদশ।
প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যাট করতে পারেননি অনেক তারকা ব্যাটসম্যান। জ্বলে উঠতে পারেননি লিটন, মুমিনুল, সাব্বির, নাঈমরা। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে ৪৭.৩ ওভারে ১৯৬ রান সংগ্রহ করে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। জবাব দিতে নেমে ৪১.১ ওভারে জয় তুলে নেয় নাজমুল একাদশ।
আজ রোববার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরুতেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানো ক্রিকেট ব্যক্তিত্বদের জন্য নীরবতা পালন করা হয়। এরপর আনুষ্ঠানিকতা শেষে মাঠে গড়ায় খেলা।
টস জিতে ব্যাট করতে নামে মাহমুদউল্লাহ একাদশ। তবে ইনিংসের শুরুতেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। তিন ওভার খেলা হওয়ার পর বৃষ্টির কারণে ৪২ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে।
বৃষ্টির পর ব্যাট করতে নেমে ধাক্কা খায় মাহমুদউল্লাহ একাদশ। বৃষ্টির পর প্রথম বলে আউট হন তরুণ ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। আল আমিনের করা বল রান নিতে গিয়ে রান আউট হন নাঈম। ৯ রান করেন এই ওপেনার।
টিকতে পারেননি লিটনও। পরের ওভারে তাসকিনের বলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ১১ রান করেন ডান হাতি এই ব্যাটসম্যান। নিজের তৃতীয় ওভারেও সাফল্য পান আল আমিন। ডানহাতি পেসারের লেন্থ বল ড্রাইভ করতে গিয়ে আউট হন মুমিনুল হক। রানের খাতা খোলার আগেই ড্রেসিং রুমে ফেরেন মুমিনুল।
মাত্র ২১ রানে তিন উইকেট হারানোর পর চাপে পড়ে যায় মাহমুদউল্লাহ একাদশ। সেখান থেকে চতুর্থ উইকেটে হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ ও ইমরুল। দুজন মিলে গড়েন ৭৩ রানের জুটি। ব্যক্তিগত ৪০ রানে ভাঙে ইমরুলের প্রতিরোধ। নাইম হাসানের বলে মিড উইকেটে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সাইফ হাসানের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
ইমরুল ফিরলেও উইকেটে থিতু ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। রানের গতি তেমন ছিল না, ৮০ বল খেলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। হাফ সেঞ্চুরি তুলতে মাহমুদউল্লাহ খেলেন তিনটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি। অবশ্য হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে মাহমুদউল্লাহকে সাজঘরের পথ দেখান মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। ফেরার আগে ৮২ বলে ৫১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। একই ওভারের তিন নম্বর সাব্বিরকে আউট করেন মুগ্ধ। ২১ রানে শেষ হয় সাব্বিরের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত শেষের দিকের ব্যাটসম্যানদের ওপর ভর করে নির্ধারিত ওভারের আগেই ১৯৬ রানে অলআউট হয় মাহমুদউল্লাহ একাদশ।
বল হাতে ৪০ রান দিয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন আল আমিন। ৩৭ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। মুকিদুল নিয়েছেন দুটি উইকেট।
জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালো করেন দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেননি দুজন। ২৭ রানে ভাঙে এই জুটি। এবাদতের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাইফ। ফেরার আগে ২২ বলে ১৭ রান করেন তিনি। বেশিদূর যেতে পারেননি সৌম্যও। এবাদতের বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ৩৪ বল মোকাবিলা করে ২১ রান করেন তিনি।
নিজের পঞ্চম ওভারে মুশফিককে শিকার বানান এবাদত। ১৩.৩ ওভারে মুশফিককে সরাসরি বোল্ড করেন তিনি। এরপর চার রানে ফেরেন আফিফ হোসেন। প্রতিরোধ গড়তে পারেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেনও। ২৮ রানে নাজমুলকে বোল্ড করেন রাকিবুল।
এরপর ইরফান শুক্কুরকে নিয়ে হাল ধরেন তরুণ ক্রিকেটার তৌহিদ হৃদয়। ৭৯ রানে পাঁচ উইকেট হারানোর পর নাজমুল একাদশকে জয়ের কাছে নিয়ে যান তৌহিদ-ইরফান। ৫২ রান করে ফেরেন তৌহিদ। আর দলকে জয় উপহার দিয়ে ৫৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন ইরফান। ৭৮ বলে তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ছয়টি বাউন্ডারি দিয়ে।