চ্যাম্পিয়নস লিগ : বার্সা নাকি বায়ার্ন?
এক লেগেই নকআউট পর্বের নিষ্পত্তি। এরই মধ্যে শেষ চারের টিকেট পেয়েছে পিএসজি ও লাইপজিগ। অপেক্ষায় আছে বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার সিটি ও লিঁও। এর মধ্যে ফুটবলভক্তদের মূল আকর্ষণ বার্সা-বায়ার্ন ম্যাচ ঘিরে। সেমিফাইনালের টিকেট পেতে আজ শুক্রবার দিবাগত রাতে মুখোমুখি হচ্ছে দুদল। লিসবনে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।
করোনা পরিস্থিতিতে ফুটবলে বার্সার ফেরাটা সুখকর হয়নি। ফিরেই হারিয়েছে স্প্যানিশ লা লিগার শ্রেষ্ঠত্ব। ভিন্ন পরিস্থিতি বায়ার্ন শিবিরে। মৌসুমের শুরু থেকে দুর্দান্ত করা বায়ার্ন ফিরেই জিতেছে জার্মানের শীর্ষ লিগ বুন্দেসলিগা। এরপর লেভারকুসেনকে ৪-২ গোলে হারিয়ে জিতেছে জার্মান কাপের শিরোপা। মৌসুমে দুই শিরোপা জেতা বায়ার্ন এবার চোখ রাখছে ট্রেবলে।
বায়ার্নের মূল ভরসার নাম রবার্ট লেভানদোভস্কি। মৌসুমজুড়ে যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্যই দুর্ভাবনার কারণ হয়ে উঠেছেন তিনি। তাই চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখ-বার্সেলোনা ম্যাচের আগেও তাই ঘুরেফিরে আসছে তাঁর নাম। মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলে ৪৪ ম্যাচে ৫৩ গোল করেছেন তিনি, যার মধ্যে ১৩টি চ্যাম্পিয়নস লিগে। গোলসংখ্যায় তাঁর ধারেকাছেও নেই রেকর্ড ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। বার্সা তারকার গোলসংখ্যা ৩১। সব মিলিয়ে বার্সেলোনার আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠতে পারেন এই স্ট্রাইকার।
তবে ফর্মে আছেন বার্সা অধিনায়ক মেসিও। গত ম্যাচেও দারুণ গোলে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন। তাই লড়াইটা শুধু বার্সা-বায়ার্নেরই নয়, বরং মেসি-লেভানদোভস্কির বলা চলে।
বায়ার্নের বিপক্ষে ১০ বারের ছয়বারই হেরেছে বার্সা। জয় এসেছে দুটিতে। তবে আগের ম্যাচে নাপোলির বিপক্ষে দারুণ পারফর্ম করেছে বার্সা। সেই ম্যাচের পারফর্ম থেকে স্বপ্ন দেখতেই পারে ক্লাবটি। কার্ড সমস্যা কাটিয়ে বুসকেটস, ভিদালের ফেরা শক্তি বাড়াচ্ছে মাঝমাঠে। তারা বল কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন, তার ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু। সেইসঙ্গে লেভানদোভস্কির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখতেই হচ্ছে।
ম্যাচটিতে বরাবরের মতো মেসিতে ভরসা রাখছেন বার্সা কোচ কিকে সেতিয়েন। মেসি ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখেন বলেই কিছুটা স্বস্তিতে তিনি। তবে দল হিসেবে না খেললে মেসির কাজটা কঠিন হবে বলেও জানিয়ে রাখলেন বার্সা কোচ, ‘প্রতিপক্ষের ক্ষমতা ও সামর্থ্য সম্পর্কে আমরা জানি। মেসি অবশ্যই ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখে। কিন্তু আমার সব সময় বিশ্বাস আছে পুরো দলের শক্তির ওপর। কারণ, এমন ম্যাচে দল হিসেবে খেলতে না পারলে মেসির একার পক্ষে কাজটা কঠিন।’
অন্যদিকে, বায়ার্ন কোচ হান্স ডিটার ফ্লিকের চোখ লেভানদোভস্কির দিকেই। তাঁর কথায়, ‘লেভানদোভস্কি বিশ্বমানের স্ট্রাইকার। পেনাল্টি এরিয়ায় তাঁর অসাধারণ দক্ষতা আছে এবং তিনি আমাদের গোলের নিশ্চয়তা দিতে পারেন। মেসি অসাধারণ, কয়েক বছর ধরেই সে বিশ্বসেরা। তার ও বার্সার বিপক্ষে কীভাবে খেলতে হবে, সেটা আমাদের জানা আছে।’
সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের সবচেয়ে বড় ম্যাচটি দেখতে যাচ্ছে ফুটবলপ্রেমীরা। চরম রোমাঞ্চকর পরীক্ষা উতরে শেষ চারে কে যাচ্ছে—বার্সা নাকি বায়ার্ন?