১৫ শিল্পী স্মরণে এফডিসিতে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া

Looks like you've blocked notifications!

এফডিসিতে আজ বাদ আসর মিলাদ মাহফিল ও দোয়া হবে ১৫ জন প্রয়াত শিল্পীর স্মরণে। বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির আয়োজনে এই মিলাদ পড়ানো হবে সমিতির স্টাডিরুমে।

এ বিষয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, ‘যাঁদের কাজ দেখে আমরা চলচ্চিত্রে এসেছি, তাঁদের মধ্যে জুলাই মাসে আমরা হারিয়েছি গুণী ১৫ জন শিল্পীকে। তাঁদের স্মরণে আমরা আজ বাদ আসর শিল্পী সমিতির স্টাডিরুমে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছি। সকাল থেকে কোরআন খতম পড়াচ্ছি। শিল্পী ও কলাকুশলীরা মিলাদে অংশ নেবেন, আপনারা সবাই দোয়া করবেন আমাদের গুণী এই শিল্পীদের জন্য।’

জায়েদ আরো বলেন, ‘আমরা প্রতি মাসে একবার করে প্রয়াত শিল্পীদের স্মরণে এই আয়োজন করে থাকি। যাঁদের দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হয়ে চলচ্চিত্রে কাজ করতে এসেছি, তাঁদের স্মরণ করে সম্মানিত করতে চাই, এতে করে নতুনরা আরো বেশি অনুপ্রাণিত হয়। প্রত্যকের মৃত্যুবার্ষিকীতে আলাদা মিলাদ পড়াতে পারলে ভালো হতো। তবে ১৫ জনের আলাদা মিলাদ পড়াতে গেলে দেখা যাবে প্রায় প্রতিদিনই মিলাদ পড়তে হবে। তাই প্রতি মাসে এই আয়োজন করে থাকি।’

ঢাকাই চলচ্চিত্রের মহানায়ক খ্যাত বুলবুল আহমেদ ২০১০ সালের ১৫ জুলাই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান। বুলবুল আহমেদ অসংখ্য টিভি নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের (ইউসুফ জহির) ‘ইয়ে করে বিয়ে’র মাধ্যমে প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। বুলবুল আহমেদ অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল ‘দুই নয়নের আলো’।

সাদা-কালো চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের কিংবদন্তি অভিনেতা রহমান। ২০০৫ সালের ১৮ জুলাই তিনি না-ফেরার দেশে চলে যান। কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা এহতেশাম পরিচালিত ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিষেক ঘটে আবদুর রহমানের। ১৯৫৯ সালে সিনেমাটি মুক্তি পায়।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় কমেডি অভিনেতা দিলদার। ২০০৩ সালের ১৩ জুলাই ৫৮ বছর বয়সে তিনি জীবনের মায়া কাটিয়ে চিরদিনের মতো পৃথিবী ত্যাগ করেন। ১৯৭২ সালে ‘কেন এমন হয়’ নামের চলচ্চিত্র দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করেন দিলদার।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্যপরিচালক আমির হোসেন বাবু। ২০০৩ সালের ৯ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যান তিনি। আশি ও নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় গানগুলোর নৃত্য পরিচালনা করেছেন তিনি।

চলচ্চিত্র অভিনেতা ফিরোজ ইফতেখার ২০০৩ সালের ৯ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যান। ঢাকাই চলচ্চিত্রের বেশ কিছু সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন।

‘কইনচাইন দেহি’ খ্যাত এ এফএম আবদুল আলী লালু। তিনি ২০০৯ সালের ২১ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যান। আশির দশকে প্রয়াত ফজলে লোহানীর ‘যদি কিছু মনে না করেন’ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের তুমুল জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতার একজন আবদুল আলী লালু। বেশ কিছু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেন।

ঢাকাই চলচ্চিত্রে অতি পরিচিত মুখ আবদুল করিম খান। তিনি অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। একটা সময় প্রায় সব সিনেমায় ছোট ছোট চরিত্রে তাঁর দেখা মিলত। ২০০৯ সালের ২২ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

চলচ্চিত্রের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নূর মির্জা। ২০১১ সালের ৩০ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যান তিনি।

চলচ্চিত্র অভিনেতা আমিনুল হক। তিনি ২০১১ সালের ৩১ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যান।

ঢালিউডের সফল চলচ্চিত্র পরিচালক শামসুদ্দিন টগর। ২০১২ সালের ২৩ জুলাই ৬৮ বছর তিনি মারা যান। সত্তর ও আশির দশকের জনপ্রিয় নায়িকা শাবানা অভিনীত ‘বানজারান’ সিনেমায় শামসুদ্দিন টগরের গাওয়া একটি গান ‘আমরা তো বানজারান দেখাবো নাচ গান’ জনপ্রিয়।

প্রবীণ অভিনেতা ও পরিচালক সৈয়দ আখতার আলী ৭৫ বছর বয়সে ২০১৩ সালের ২২ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যান। ‘নদী ও নারী’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। এরপর অভিনয় করেন অসংখ্য সিনেমায়। তিনি ‘নাবালক’ নামে একটি সিনেমা পরিচালনাও করেন।

চলচ্চিত্র অভিনেতা মনির হোসেন বুলেট। তিনি ২০১৫ সালের ১ জুলাই না-ফেরার দেশে চল যান। বেশ কিছু সিনেমায় তিনি খলচরিত্রে অভিনয় করেছেন।

মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের গুণী অভিনেতা আবদুর রাতিন ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই ৬৬ বছর বয়সে না-ফেরার দেশে চলে যান। ১৯৭২ সালে টেলিভিশন নাটকে অভিনয় শুরু করেন। দুই শতাধিক টেলিভিশন নাটকে তাঁকে দেখা গেছে। ১৯৭০ সালে ‘নতুন প্রভাত’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে তাঁর অভিষেক ঘটে।

জনপ্রিয় অভিনেত্রী রানী সরকার ২০১৮ সালের ৭ জুলাই না-ফেরার দেশে চলে যান। ষাট ও সত্তর দশকের এই খল-অভিনেত্রীর অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। ১৯৫৮ সালে এ জে কারদার পরিচালিত ‘দূর হ্যায় সুখ কা গাঁও’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রানী সরকারের অভিষেক হয়। ২০১৬ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন এই অভিনেত্রী।