রোহিঙ্গা সংকট : কাজকর্মে উল্টোটাই করছে মিয়ানমার
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দ্বিপাক্ষিকতার পথ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের কারণে মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাজি দেখালেও কাজকর্মে তার উল্টোটাই করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিকতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ এখনো আঁকড়ে ধরে আছে।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘রোহিঙ্গা সংকট : ভবিষ্যৎ চুক্তি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করে ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এহসানুল হকের সভপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি মিজ মিয়া সেপো বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সম্মেলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন।
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্ত পরিস্থিতি অশান্ত ও উত্তপ্ত করা হচ্ছে। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপরে নানাবিধ নির্যাতন ও চাপ প্রয়োগ এবং বিভিন্ন উপায়ে ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমিতে ফিরে যাওয়ার পথ বন্ধের নানা উদ্যোগ মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সর্বদা নেওয়া হচ্ছে।
মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগে বাংলাদেশের ভূমিকা প্রসঙ্গে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ভারত ও চীন পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে নেই। তবে বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবে কাজ শুরু করেছে। এই দুটো দেশ তাদের সিদ্ধান্ত এখনো ঠিক না করায় বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে ছেড়ে দেবে।
এই সংকটের সমাধানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সম্মুখীন হতে হবে বলে মনে করেন ঢাবির এই অধ্যাপক। সরকারের কাজ করার পাশাপাশি সিভিল সমাজ এবং গণমাধ্যমের তৎপরতার প্রয়োজন বলে মনে করেন ইমতিয়াজ আহমেদ।
জাতিসংঘের আঞ্চলিক সমন্বয়ক ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপির প্রতিনিধি মিজ মিয়া সেপো বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের সব দেশ ও সংস্থাকে বাংলাদেশের পাশে থাকা উচিত। মানবতার প্রশ্নে মানবতাবাদীদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি রোহিঙ্গা মুসলিমসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের টেকসই পুনর্বাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যার ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি মোকাবিলার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।