রোগীদের দ্বারে গিয়ে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দিচ্ছেন তাঁরা
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশও ভুগছে এর প্রকোপে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকেই ভুগছেন শ্বাসকষ্টে। দেশের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সিলিন্ডার না থাকায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকছেন তারা। আর এসব রোগীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে অক্সিজেন সেবা দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তিন শিক্ষার্থী।
ওই তিন শিক্ষার্থী হলেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স এবং ঢাবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ।
সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য ওই শিক্ষার্থীরা চালু করেছেন ‘জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা’। ব্যক্তিগত উদ্যোগ, বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের আর্থিক সহায়তায় প্রাথমিকভাবে ১২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই কার্যক্রম চালাচ্ছেন তাঁরা। রাজধানীর যে কোনো এলাকা থেকে ০১৬২৩০০০১০০, ০১৬৭৭১২৫৭৫৮, ০১৭২৫৩৪৩০৩৮ নম্বরে ফোন করলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তাঁরা।
সাদ বিন কাদের চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কোনো ধরনের ফি কিংবা জামানত ছাড়াই এই সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেবা পেতে হলে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। পাশাপাশি সেবা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিলিন্ডার ফেরত দিতে হবে।’
সাদ বিন কাদের আরো বলেন, ‘আমরা রোগীদের আহ্বানে যাই। আমাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকেন। তাঁরাই এটি লাগিয়ে দেন। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, রোগীরা কল করার পর আমরা ওই রোগীর অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন কি না, সে ব্যাপারে চিকিৎসকের রিকুইজিশন দেখি। চিকিৎসকের রিকুইজিশন থাকলে আমরা তাদের এই অক্সিজেন সেবা দিচ্ছি।’
এরই মধ্যে কয়েকজন রোগীকে এ সেবা দেওয়া হয়েছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে বলেও জানান ওই শিক্ষার্থীরা। শুধু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীই নন, অন্যান্য রোগীর জন্যেও অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে বিনামূল্যে জয় বাংলা অক্সিজেন সেবা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সাদ বিন কাদের জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ফুসফুস আক্রান্ত হয় বলে অনেক ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়ে গেছে বলে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতা সবুর খান কলিন্স বলেন, ‘আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্য অনুযায়ী এই উদ্যোগ। অক্সিজেনের অভাবে যেন কেউ মারা না যায়, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ যার যার অবস্থান থেকে সবাই এগিয়ে এলে অক্সিজেনের অভাবে কেউ মারা যাবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।