মাদকসেবী ধরতে গিয়ে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মাদকসেবী ধরতে গিয়ে আইনজীবী ইসমাইল হোসেন পলাশ হত্যার প্রধান আসামি ও তাঁর সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার নাভানা সিএনজি স্টেশনের পেছনে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন সাব্বির হোসেন মামুন (২৬) ও সাজ্জাদ হোসেন (২৫)। এদের মধ্যে মামুন শহরের উত্তর ভৈরবপুর এলাকার বাসিন্দা। আর সাজ্জাদ শহরের কমলপুর নিউটাউন এলাকায় থাকতেন।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম তালুকদার এনটিভি অনলাইনকে জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সিলেট বাসস্ট্যান্ড এলাকার নাভানা সিএনজি স্টেশনের পেছনে একদল মাদকসেবী মাদক সেবন করছে বলে পুলিশের কাছে খবর আসে। এর ভিত্তিতে ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও মামুন ও সাজ্জাদকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
ওসি জানান, আটকের পর দেখা যায় যে, মামুন আইনজীবী পলাশ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি। এ ছাড়া সাজ্জাদ এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী। মামুনের বিরুদ্ধে পলাশ হত্যাকাণ্ড ছাড়াও ছিনতাইয়ের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। পলাশ হত্যাকাণ্ডের পর সে গা-ঢাকা দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন পলাশকে গত ৭ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সিরাজনগর এলাকার বাবুল কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ছুরিকাঘাত করে ফেলে পালিয়ে যায় একদল ছিনতাইকারী। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পলাশকে মৃত ঘোষণা করেন।
৯ মার্চ পলাশের ছোট বোন শারমিন সুলতানা পুতুল বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
এই মামলায় পুলিশ শহরের ভৈরবপুর উত্তর এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী রূপককে (২০) গ্রেপ্তার করে। রূপক ৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিত দিলে পলাশ হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়। সেখানে সে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত মামুন, নিবিড়সহ এলাকার আরো কয়েক ছিনতাইকারীর নাম উল্লেখ করা হয়।
এরপরই মামুন-নিবিড়সহ সন্দেহভাজন অন্য হত্যাকারীরা গা-ঢাকা দেয়। এর কিছুদিন পর ভৈরব-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের বাজিতপুর এলাকা থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নিবিড়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আইনজীবী পলাশ (৩০) ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের দক্ষিণ আগানগর গ্রামের প্রয়াত হাসিম মেম্বারের ছেলে। তিনি ওই এলাকার শিশু বিদ্যাপিঠ নামের একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রতিষ্ঠাতা এবং ভৈরব কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ছিলেন।