ভৈরবের শ্রীনগর ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলরুবা আহমেদ। আজ শনিবার শ্রীনগর হাইস্কুল মাঠে এক মুক্ত আলোচনা সভার পর তিনি এ ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে এলাকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, সুশীলসমাজের প্রতিনিধি, কাজি, মসজিদগুলোর ইমাম, শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, এনজিওকর্মীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি উপস্থিত সবার হাতে দেওয়া লিখিত শপথবাক্য পাঠ করিয়ে বাল্যবিবাহকে ‘না’ অঙ্গীকার করান।
দুপুর ১টার দিকে শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মুক্ত আলোচনায় ইউএনও প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। তিনি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করার অঙ্গীকার করেছেন। সে লক্ষ্যে সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু সরকার যতই চেষ্টা করুক, প্রশাসন যতই কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করুক না কেন, কাজের কাজ কিছুই হবে না; যতদিন না অভিভাবকসহ স্থানীয় লোকজন সচেতন না হবেন, বাল্যবিবাহকে পরিবার ও সমাজের জন্য ব্যাধি না মনে করবেন। তাঁদের বুঝতে হবে, বাল্যবিবাহ একজন নারী ও শিশুর এগিয়ে চলাকে থামিয়ে দেয়। তার জীবনটাকে ফেলে দেয় নানামুখী ঝুঁকিতে। এই বাল্যবিবাহের কারণে পরিবার ও সমাজে অশান্তি নেমে আসে। দেখা দেয় অস্থিরতা। জন্ম দেয় অপুষ্টি আর রোগা সন্তানের। যা দুরন্ত গতিতে চলা দেশের উন্নতিকে চরমভাবে বাধাগ্রস্ত করবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চিত্রা শিকারী, বিশিষ্ট শিল্পপতি হাজি মো. ফুল মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মুস্তাক আহমেদ।
এ ছাড়া মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য, ইউনিয়ন কাজি, স্থানীয় মসজিদগুলোর ইমামসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করেন ইউএনও দিলরুবা আহমেদ। ১০ অক্টোবর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস।