মেঘনায় গোসল উৎসব, জল ও জীবনপ্রবাহ রক্ষার দাবি
স্বচ্ছ স্রোতস্বিনী, চিরযৌবনা এবং হাওরাঞ্চলের যোগাযোগসহ সব সমৃদ্ধতার প্রতীক মেঘনা। এই নদীর জল ও জীবনপ্রবাহকে অব্যাহত রাখা এবং দেশের সব নদীসহ প্রাকৃতিক জলাধার রক্ষার দাবি জানিয়ে এই নদীতে গোসল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
দ্য ব্ল্যাকহোল অ্যাসোসিয়েটস নামের একটি স্থানীয় সংগঠন আজ শনিবার সকাল ৭টার দিকে ভৈরবের মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত রেল ও সড়ক সেতু এলাকায় দ্বিতীয় বছরের মতো এই উৎসবের আয়োজন করে। এতে যোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে লুঙ্গি ও গামছা নিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
এই আয়োজনকে ঘিরে এলাকায় অন্যরকম উৎসবের আমেজ বয়ে যায়। ভৈরববাসীর কাছে মায়ের মতো গণ্য হওয়া মেঘনার শীতল জলে গোসলে নামার আগে এর বর্তমান অবস্থাকে অটুট রাখা এবং দেশের সব নদীসহ প্রাকৃতিক জলাধার রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন উৎসবে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন। পরে নদীকে দূষণ না করতে এবং অবৈধ দখলে নিজেদের কোনোভাবেই জড়িত না করতে শপথ নেন নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতারা।
এ সময় বক্তব্য দেন ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়া, পৌরসভার মেয়র হাজি মো. শাহীন, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আলহাজ মো. হুমায়ুন কবির, সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ইবনুল সাঈদ রানা, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাদ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী এম মতিউর রহমান সাগর প্রমুখ।
মানববন্ধনের আগে গোসল করতে আসা লোকজনকে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য মুড়ি, খৈ, কদমা-মণ্ডা মাটির সানকিতে পরিবেশন করা হয়। এ সময় স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার আগতদের বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ ও ডায়াবেটিস পরীক্ষাসেবা দেয়।
উৎসবের ফাঁকে আয়োজন সম্পর্কে জানান সংগঠনটির কর্মী রাকিবুল হাসান সবুজ ও ইশতিয়াক আহমেদ রিগান। তাঁরা এনটিভি অনলাইনকে জানান, সারা দেশের নদীসহ সব প্রাকৃতিক জলাধার ক্রমেই ধ্বংস হচ্ছে। সারা দেশ নিয়ে কাজ করার সামর্থ্য তাঁদের না থাকায়, তাঁরা নিজ এলাকার নদী মেঘনা রক্ষার আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁদের এ কর্মসূচি দেখে দেশের অপরাপর এলাকার লোকজনও যদি এমন কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসেন, তবেই তাঁদের এই আয়োজন সফল ও সার্থক হবে।