সিরাজগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স : ৩ উপজেলায় এক মাসে আক্রান্ত ৯০
সিরাজগঞ্জে গত এক মাসে তিন উপজেলায় প্রায় ৯০ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুও আছে। ওই তিন এলাকায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলার উল্লাপাড়া, কামারখন্দ ও শাহজাদপুর উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়।
এরই মধ্যে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় এবং ওই তিন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। এসব এলাকায় অসুস্থ গরু জবাই না করার জন্য মাইকযোগে প্রচার ও প্রচারপত্র বিলি করা হচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগীদের ওপর গবেষণার জন্য ঢাকা থেকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর’বি) থেকে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এসেছে। মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইসমাইল ফারুকের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধিদল অ্যানথ্রাক্স রোগীদের নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছে, গবাদি পশুগুলোকে নিয়মিত টিকা প্রদানে প্রাণি সম্পদ বিভাগের গাফিলতি ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি না নেওয়ায় এ রোগের বিস্তার ঘটছে।
অ্যানথাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস কাটা ও খাওয়ার কারণে উল্লাপাড়া উপজেলায় গত রোববার ও সোমবারে ৪৩ জন, গত ৬ মে কামারখন্দে ২৯ জন এবং গত ৮ মে শাহজাদপুরে ১৮ জন আক্রান্ত হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, গবাদি পশু পালনকারীদের অসতর্কতার কারণে প্রতি বছর সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অ্যানথ্রাক্স রোগটি ছড়ায়। রোগাক্রান্ত পশুগুলোকে জবাই করে তার মাংস নাড়াচাড়া ও খেলে মানুষও আক্রান্ত হয়। প্রাণিসম্পদ বিভাগ জেলাব্যাপী ‘রিং ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি’ হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া অসুস্থ প্রাণি জবাই ও খাওয়া বন্ধ, মৃত গরুকে ৬ ফুট মাটির নিচে পুঁতে রাখাসহ জনসচেতনতা তৈরিতে কাজ শুরু করা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন শহীদ মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত তিন উপজেলায় ৩৪টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এ রোগে এখনো কারো মৃত্যু হয়নি, শঙ্কিত হওয়ারও কোনো কারণ নেই। পর্যাপ্ত সরকারি ওষুধ রয়েছে।’
সিরাজগঞ্জে অবহিতকরণ সভা
সিরাজগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে এক অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। আজ বুধবার দুপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হলরুমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন শহীদ মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন, পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান ভুইয়া প্রমুখ।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থান করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. রিয়াদ হোসেন।