‘বিচারপতি মানিক স্যাডিস্ট’

সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদূল আমিন চৌধুরী বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্টে নজিরবিহীন বিতর্কের জন্ম দেওয়া অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক নিজেকে ‘স্যাডিস্ট’ (ধর্ষকামী, অন্যকে কষ্ট দিয়ে সুখ পাওয়া) প্রমাণ করেছেন। একসময় সংসদ সদস্যরা তাঁকে এই অভিধা দিয়েছিলেন, এখন তিনি সেটা প্রমাণ করলেন।”
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি সুপ্রিম কোর্ট শাখা আয়োজিত সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিরাজমান পরিস্থিতি শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন।
বিচারপতি মাহমুদূল আমিন চৌধুরী বলেন, “এর আগে জাতীয় সংসদে ওনাকে সংসদ সদস্যরা ‘স্যাডিস্ট’ বলেছিলেন। সেটি তিনি প্রমাণ করেছেন।” সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা তাঁকে স্যাডিস্ট বললেন, আবার আপনারাই তাঁকে আপিল বিভাগে নিলেন কেন? জুডিশিয়ারিকে বাঁচাতে হবে। জুডিশিয়ারি নিয়ে মানিক যেসব ব্ক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে বিচার বিভাগ ধ্বংস হচ্ছে।’
মাহমুদূল আমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার কাছে একজন উকিল নালিশ করেছিল যে একজন জজসাহেব ১৫ মাস ধরে রায় লিখে দিচ্ছেন না। আমি শুনেছি এক থেকে দেড়শ জাজসাহেবের কাছে অনেক রায় লেখা বাদ আছে। কিন্তু কেন? এত সময় লাগে কেন? আমাদের সময় তো রায় লিখতে এত সময় লাগত না।’
‘আমি প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় বিচারপতি মানিক হাইকোর্টে আসেন, এক বছর ঠান্ডা ছিলেন। কিন্তু তার পর থেকেই তিনি আর ঠান্ডা নেই।’ যোগ করেন তিনি।
বিচার বিভাগের সংস্কারে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার গৃহীত পদক্ষেপকে সমর্থন দিতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদূল আমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি সঠিক রাস্তায় নিয়ে যেতে চেষ্টা করছেন। আপনাদের উচিত তাঁকে সহযোগিতা করা। আপনারা বিচার বিভাগকে বাঁচান। দেশ রক্ষা করুন। দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করুন।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘বিচার বিভাগ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। এই বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাক আমরা চাই না। বিচার বিভাগ সম্পর্কে যখন ভালো কিছু শুনি, তখন মনটা ভরে যায়।’
অনুষ্ঠানে হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ড. শাহদীন মালিক, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বক্তব্য দেন।