মানুষের মাঝে বেঁচে আছেন মমিনুল মউজদীন

‘কবি মমিনুল মউজদীন একজন আলোকিত মানুষ। জনপ্রতিনিধি হিসেবে যেমন নন্দিত ছিলেন, অন্যদিকে ছিলেন রোমান্টিক ও মানবতাবাদী কবি। তিনি কর্মগুণে মানুষের মনে অনির্বাণ শিখা হয়ে আছেন। তাঁর হৃদয়ে যে দরদ ও ভালোবাসা ছিল সেটিই মানুষের মাঝে তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে।’
মরমি কবি হাসনরাজার প্রপৌত্র ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার তিনবারের চেয়ারম্যান প্রয়াত মমিনুল মউজদীনের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার আয়োজিত স্মরণসভা ও বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সুনামগঞ্জ শহরের শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে এই স্মরণসভা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই মমিনুল মউজদীনকে নিয়ে নির্মিত ‘হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ’ ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আগে মমিনুল মউজদীন ও তাঁর স্ত্রী-পুত্রের কবরে বিশেষ মোনাজাত ও পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, মমিনুল মউজদীন সুনামগঞ্জবাসীর অতি আপনজন ছিলেন। সুনামগঞ্জে তাঁর মতো এত সাহসী, জনদরদী নেতা আর সৃষ্টি হয়নি। মানুষ তাঁকে পরিবারের একজন হিসেবে মনে করত।
সুনামগঞ্জের প্রবীণ আইনজীবী ও লেখক হোসেন তওফিক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশিদ, শিশু সাহিত্যক ও সাংবাদিক আবু সাইদ জুবেরী। এ ছাড়া বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু, সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মকবুল হোসেন, সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ দীলিপ কুমার মজুমদার, হবিগঞ্জ জেলার বৃন্দাবন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ন্যাথানায়েল এডউইন ফেয়ারক্রস, হাসনরাজা ট্রাস্টের সভাপতি দেওয়ান ইমদান রেজা চৌধুরী, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র নুরুল ইসলাম বজলু, মমিনুল মউজদীন স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক গণিউল সালাদীন, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লতিফুর রহমান রাজু, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক পঙ্কজ দে, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বদরুল কাদির শিহাব, শিক্ষক আলী হায়দার, সুনামগঞ্জ পৌর কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহ আবু নাসের, শিক্ষক কুহিনুর বেগম, সুনামগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল নোমান, আহমদ নূর, মাওলানা এমদাদুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এনটিভির জেলা প্রতিনিধি দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী। পরে ১৮১ জন শিক্ষার্থীকে মমিনুল মউজদীন স্মৃতিবৃত্তি প্রদান করা হয়।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মমিনুল মউজদীন ও তাঁর স্ত্রী তাহেরা চৌধুরী, ছেলে কাহলিল জিবরান মারা যান। কবি মমিনুল মউজদীন জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘এ শহর ছেড়ে পালাবো কোথায়’ এবং মৃত্যুর পর ‘হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ’ প্রকাশিত হয়।