দাফনের আগে নড়েচড়ে উঠল নবজাতক
সকাল ১০টার দিকে আজিমপুর কবরস্থানে এক নবজাতককে দাফনের জন্য আনা হয়। নবজাতকের স্বজনরা জানান, শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয় ‘মৃত’ হয়ে। দাফনের আগে গোসল করানোর জন্য নবজাতকের গায়ে পানি ঢালা হয়। আর তখনই নড়েচড়ে ওঠে ওই শিশু!
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। ওই কবরস্থানের কর্মকর্তা হাফিজুল ইসলাম এসব জানান।
নবজাতকটিকে পরে দ্রুত আজিমপুরে মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে (আজিমপুর মেটারনিটি হাসপাতাল বলে পরিচিত) নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে তাকে দ্রুত শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশুটিকে আগারগাঁওয়ে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাফিজুল ইসলাম জানান, শিশুটিকে দাফনের আগে গোসল করানো হচ্ছিল। জেসমিন নামের একজন গোসল করাচ্ছিলেন। জেসমিন জানান, গোসল দেওয়ার জন্য গায়ে পানি ঢালার সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি নড়ে উঠে, শ্বাস নিতে থাকে।
জানা যায়, শিশুটির নাম দেওয়া হয়েছিল মিম। শিশুটি মায়ের নাম শারমিন আক্তার (২০), বাবার নাম মিনহাজ উদ্দিন। তাঁদের বাড়ি ঢাকার ধামরাই উপজেলার শ্রীরামপুরে। গত শনিবার শারমিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ শনিবার সকালে মিমের জন্ম হয়।
মিনহাজ জানান, তাঁর স্ত্রী শারমিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।
‘এ বিষয়ে ডাউট আছে’
মৃত ঘোষণার পর জীবিত হওয়া শিশুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন। এ বিষয়ে জানার জন্য চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এরই মধ্যে তা জানার চেষ্টা করছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দেওয়া শিশুর মৃত্যুর সনদ। ছবি : এনটিভি
একেএম নাসির বলেন, ‘২৭ সপ্তাহ প্রেগনেন্সি নিয়ে শারমিন নামের ওই নারী ভর্তি হন। আজ সকালে তার একটি স্টিল বর্ন বেবি (মৃত বাচ্চা) হয়। এখনও ওই নারীর ব্লিডিং হচ্ছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে। মৃত বাচ্চা হওয়ার বিষয়টি তার স্বজনদের জানানো হয়েছে এবং মৃত বাচ্চাটিও হ্যান্ডওভার করা হয়েছে।’
একেএম নাসির বলেন, ‘আমাদের ইনকোয়ারি করে দেখতে হবে যে শিশুটিকে জীবিত দাবি করা হচ্ছে সে এই নারীরই কিনা। যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে ইনকোয়ারি করা কবে, এবং কি হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। তবে এ বিষয়ে আমাদের ডাউট আছে।’