এক-এগারোকে ‘কালো দিবস’ বললেন জমিরউদ্দিন
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্ক শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, ‘খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করে খেয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের এমন বক্তব্য আদালতের কাজে হস্তক্ষেপ কি না? তা মাননীয় আদালত ভেবে দেখবেন।’
এ ছাড়া তিনি তাঁর বক্তব্যে বারবারই আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের কথা আদালতকে স্মরণ করিয়ে দেন।
জমিরউদ্দিন সরকার এক-এগারোকে ‘কালো দিবস’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ওই সময় সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে ও খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন বাধাগ্রস্ত করতে মামলাগুলো দেওয়া হয়েছে। এখন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা আছে।’
আজ বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে নবম দিনের মতো খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানির প্রথমে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জমিরউদ্দিন সরকার আদালতে বিএনপির চেয়ারপারসনের আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেওয়া বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে শোনান। এর পরেই সরকার পক্ষের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল আদালতে এ বক্তব্যের বিরোধিতা করেন।
মোশারফ হোসেন বলেন, ‘এসব বক্তব্য খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থনের আগেই বলেছেন। এখন তো এসব বলার কোনো কারণ নেই।’
তখন দুই পক্ষের আইনজীবীর মধ্য বিবাদ শুরু হয়। জমিরউদ্দিন সরকার সরকারপক্ষের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজলকে বলেন, ‘আপনি সকাল সকাল ঝগড়া শুরু করে দিলেন?’ এর পরেই বিচারকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলেই মামলার শুনানি শুরু হয়।
এর পরে জমিরউদ্দিন সরকার যুক্তি উপস্থাপনে বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা করে তিনি দেখেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই দুর্নীতি দমন কমিশন প্রমাণ করতে পারেনি।’
ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে না পারলে এর সুবিধা আসামি পাবেন। জমিরউদ্দিন সরকার আদালতকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার চান, ন্যায়বিচার করুন।’
এ ছাড়া তিনি তারেক রহমানের খালাস দেওয়া সেই বিচারককে কীভাবে হয়রানি করা হয়েছিল, সে তথ্য-উপাত্ত আদালতের শুনানিতে তুলে ধরে বলেন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটের দিকে আদালতে পৌঁছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।