সাইফুলের ঋণ এখন কে শোধ করবে?
ঋণের টাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা কিনেছিলেন সাইফুল ইসলাম। সেই ঋণের জন্য প্রতি সপ্তাহে তাঁকে পরিশোধ করতে হতো এক হাজার ৭০০ টাকা। মাত্র পাঁচ মাস আগে নেওয়া ওই রিকশাটি ট্রাকের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেছে। সঙ্গে জীবনটাও হারাতে হয়েছে সাইফুলকে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বড়হর ইউনিয়নের পূর্ব দেলুয়াপাড়ার বাসিন্দা সাইফুল প্রতিদিনের মতো গতকাল শুক্রবার ভোরে রিকশা নিয়ে বের হন। শ্রীকোলা মোড় এলাকায় পৌঁছালে বগুড়া থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ যায় সাইফুল ও আকাশ নামে এক যাত্রীর। এর পর থেকেই সাইফুলের পরিবার দিশেহারা। একমাত্র উপার্জনের মানুষটিকে হারিয়ে তারা পাগলপ্রায়।
সাইফুলের উপার্জন দিয়ে তাঁর তিন ভাই, বৃদ্ধ বাবা-মা, এক মেয়ে এবং পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুফিয়া খাতুনের সংসার চলছিল। পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই ছিল।
পরিবারের অভাব দূর করতে গত অক্টোবরে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের উল্লাপাড়া শাখা থেকে ২৫ হাজার ও সোসাইটি ফর সোশ্যাল সার্ভিস (এসএসএস) নামের স্থানীয় এনজিও থেকে ৪৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে রিকশাটি কিনেছিলেন সাইফুল।
একদিকে সংসারের অভাব, অন্যদিকে প্রতি সপ্তাহে এক হাজার ৭০০ টাকা কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে সাইফুলকে অনেক চাপ সহ্য করতে হতো। দিন-রাত কষ্ট করে এই টাকা সংগ্রহ করতেন তিনি।
নিহতের চাচাতো ভাই মো. ইউনুস আলী জানান, সাইফুল নিহত হওয়ায় তাঁর ঋণ ও পরিবারের খরচ নিয়ে দিশেহারা তাঁর পরিবার। কীভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন তাঁর স্ত্রীসহ সবাই।
ইউনুস আলী আরো জানান, সাতজনের পরিবারে একমাত্র সাইফুলই উপার্জন করতেন। আড়াই শতাংশ জায়গার ওপর সবাইকে নিয়ে থাকতেন তিনি। তাঁর বাবা আবদুর রহমান, মা আনোয়ারা বেগম বৃদ্ধ, বড় ভাই আমিরুল ইসলাম মানসিক ভারসাম্যহীন এবং রাজমিস্ত্রির কাজ শিখছেন ছোট ভাই আসাদুল ইসলাম।