দুর্নীতির অভিযোগে বরিশালে ওসিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ক্ষমতার অপব্যহার ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বরিশালের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার বরিশালের বিশেষ জজ আদালতে এই মামলা করা হয়।
বরিশাল নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোড এলাকার বাসিন্দা নিলুফা বেগম এই মামলা করেন। আদালতের বিচারক মো. আনোয়ারুল হক তদন্তের জন্য অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন কোতোয়ালি থানার ওসি শাহ মো. আওলাদ হোসেন, থানার উপপরির্দশক (এসআই) মামুন, ডা. আনোয়ার উল্লাহ, তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম, মুকিব হোসেন ও জামালউদ্দিন ইউসুফ। এর মধ্যে মুকিব হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
মামলায় সাক্ষী হিসেবে অন্যদের পাশাপাশি বরিশাল মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আব্দুর রউফ খান, কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান ও উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়াহাবের নাম দেওয়া হয়েছে।
মামলার আর্জিতে বাদী উল্লেখ করেন, নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোড এলাকায় ৭ শতাংশ জমিতে দোকানঘর ও ভাতের হোটেল দিয়ে তিনি (নিলুফা বেগম) জীবিকা নির্বাহ করতেন। ওই জমির মালিকানা দাবি করে বিবাদী আনোয়ার উল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ওই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে থানার এসআই মামুন তাঁকে নোটিশ দেন।
গত ২৫ জানুয়ারি থানায় কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত হওয়ার পর ওসি নিলুফাকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে জমির দখল ছেড়ে দিতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় ওসি বিবাদী ডা. আনোয়ারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে তাঁদের জমি থেকে উচ্ছেদ করার দায়িত্ব নেন। এই পরিস্থিতিতে জমি থেকে উচ্ছেদের শঙ্কায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে মামলা করা হয়। মামলায় জমি থেকে কোনো ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদ না করার জন্য স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত। এরপরও ওসি জমি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি অব্যাহত রাখেন।
মামলায় আরো বলা হয়, বিষয়টি উপপুলিশ কমিশনার আবদুর রউফ খানকে অবহিত করা হয়। আদালতের নির্দেশনার ভিত্তিতে জমিতে পরবর্তী কোনো কার্যক্রম না করার জন্য ওসি শাহ মো. আওলাদকে অবহিত করেন পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান ও এসআই ওয়াহাব। কিন্তু এত কিছুর পরও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে নেওয়া অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কিছুদিন আগে ওসির নির্দেশে এসআই মামুন, ডা. আনোয়ার, মুহিব হোসেন ও রহিমা বেগমসহ ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী তাঁর জমিতে হামলা করে। তারা দোকান ও হোটেল ভাঙচুর এবং বাদী ও তাঁর মেয়ের শ্লীলতাহানি করে। হামলায় বাদীর মেয়ে আহত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার করতে বর্তমানে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।
দায়ের করা আর্জিতে বাদী আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য, ঘুষ গ্রহণ এবং ক্ষমতার অপ-ব্যবহারের অভিযোগ আনেন। বাদীর অভিযোগের বিষয়টি শুনানির পর সেটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক মো. আনোয়ারুল হক।
অভিযোগের বিষয়ে ওসি আওলাদ বলেন, ‘মূল মালিকের জমি বেআইনিভাবে দখল করে রেখে একের পর এক মিথ্যা মামলা এবং অভিযোগ দিয়ে চলেছেন নিলুফা বেগম। তদন্তেই প্রমাণিত হবে যে আমি দোষী কি না।’