মাদারীপুরে তলিয়েছে পদ্মাতীরের ধানখেত
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী চরাঞ্চলে ধানের খেত প্লাবিত। গত কয়েক দিনে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে গেছে ফসল। এতে কৃষকের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।
একদিকে, ঋণের বোঝা; অন্যদিকে, তলিয়ে যাওয়া ফসল ঘরে তুলতে মজুরি পরিশোধের জন্য নেই পকেটে টাকা। ফলে নিজেরা মিলে যে যতটুকু পারছেন, পানির মধ্য থেকে পাকা ও আধপাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। যদিও এরই মধ্যে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, বলছেন তাঁরা।
জেলার শিবচর উপজেলার চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ি, বন্দরখোলা ইউনিয়নের নদীর পাশের শত শত বিঘা ধানখেত তলিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, নদীতে হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ধানখেতে পানি ঢুকে পড়েছে। ধান এখনও পাকেনি। আধপাকা অবস্থায় আছে। এরই মধ্যে আগাম পানি ঢুকে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রচুর হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
এদিকে, ক্ষতি সামাল দিতে পানির মধ্য থেকে আধপাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষক। তাঁদের অনেকের দাবি, ঋণ করে ধান চাষ করেছেন। এখন সে ঋণ পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাঁরা।
বেশ কিছু কৃষক দাবি করেন, নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ ফসলের খেতে পানি ঢুকে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে, কী পরিমাণ হতে পারে, তা তাঁরা বলতে পারেননি। যদিও পৃথক পৃথকভাবে তাঁরা তাঁদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলার চেষ্টা করেছেন। এদিকে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিশ্চিত নয় উপজেলা কৃষি বিভাগ।
স্থানীয় এক কৃষক জানান, হঠাৎ পানি এসে ধানখেত তলিয়ে গেছে। ধান কাটার জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। দু-চার জন যা পাওয়া যাচ্ছে, তাঁদের আবার মজুরি বেশি। জনপ্রতি চাচ্ছেন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। অন্যদিকে, কৃষকের হাতে টাকা নেই। এখন ধান ঘরে কীভাবে উঠবে, সেটিই বড় প্রশ্ন।
এলাকার অপর এক কৃষক জানান, তিনি দশ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। এর মধ্যে ছয় বিঘা জমির ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন। আর সবই তলিয়ে আছে পানির মধ্যে। টাকা নেই। তাই সেগুলো কাটারও লোক নেই। শেষ পর্যন্ত হয় তো পানিতেই পচে যাবে আধা পাকা সে সব ধান।
চরজানাজাত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রায়হান সরকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের চরের শত শত বিঘা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন তা পচে যেতে শুরু করেছে। কৃষক দিনরাত পানির মধ্যে থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত রয়েছেন।’
আগাম পানি বৃদ্ধির কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি চেয়ারম্যান রায়হানের।