পশু কাটতে গিয়ে নিজেই আহত, ঢামেকে শতাধিক ‘মৌসুমি কসাই’
কোরবানির গরু জবাইয়ের পর আহসান হাবিব (৪০) নামের এক মৌসুমি কসাই মাংস কাটাকাটি করছিলেন। এমন সময় দায়ের কোপে তাঁর পায়ের এক আঙুল কেটে পড়ে যায়। ঘটনাটি আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় ঘটে। পরক্ষণেই তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগে আসেন চিকিৎসা নিতে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, ঈদুল আজহার দিন অর্থাৎ বুধবারের সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢামেকের জরুরি বিভাগে ১০৩ জন মৌসুমি কসাই আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসকের মতে, জরুরি বিভাগে সকাল থেকে আসা মোটামুটি ৯৫ ভাগ রোগীই মৌসুমি কসাই।
দুপুরে ঢামেকের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, মোট ছয়জন রোগী সেখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এ ছয়জনের মধ্যে দুজন ছিলেন অস্ত্রোপচারের কক্ষে। বাকি চারজন ব্যান্ডেস করা অবস্থায় ছিলেন। এই চারজনের মধ্যে আলী হোসেন মাংস কাটতে গিয়ে নিজের হাতের অনেকখানিই কেটে ঢামেকে ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ড. রাজীব কর্মকার এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মোট ১০৩ জন মৌসুমি কসাই জরুরি বিভাগে টিকেট কেটে চিকিৎসা নিয়েছেন। যারা সবাই কোরবানির পশু কাটাকাটি করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তবে এই সংখ্যা কাগজে-কলমে ১০৩ হলেও আসলে তা আরও বেশি। অনেকেই ভর্তি না হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলে গেছেন। আর যারা টিকেট কেটেছিলেন, তারাও যথাযথ চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।’
রাজীব কর্মকার আরও বলেন, ‘এই ১০৩ জনের মধ্যে কেউ কেউ গুরুতর আহত হয়েছেন। যাদের রক্তনালী পুরোপুরি কেটে পড়ে গেছে তাদেরকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। যদিও এ সংখ্যা খুবই কম। মাত্র কয়েকজনকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তবে অন্যদিনের মতো আজ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া রোগীর সংখ্যা খুবই কম। আজ জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া ৯৫ ভাগ রোগীই মৌসুমি কসাই।’
চিকিৎসকের মতে, মৌসুমি কসাইরা পশু কাটাকাটিতে দক্ষ হয় না। ফলে তারা যথাযথভাবে কাজটি করতে পারেন না। অসাবধানতাবশত দা-বটিতে হাত-পা কেটে আহত হয়ে তারা হাসপাতালে আসেন। প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের দিনে ঢাকা মেডিকেলে এ ধরনের রোগী এসে থাকে।