ঢাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা উচিত
রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া এবং ইডিপি না নিয়ে কারখানা গড়ে ওঠায় ঢাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
বুড়িগঙ্গায় পানিদূষণের বিষয়ে এক রিটের সম্পূরক আবেদনের শুনানি শেষে আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
একই সঙ্গে বুড়িগঙ্গার দূষণ নিয়ে ওয়াসার এমডির আদালত অবমাননার বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন আদালত।
আদালতে আজ বাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম।
পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, বুড়িগঙ্গার দূষণরোধ নিয়ে যে মামলা চলছে সেখানে শ্যামপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকার বিভিন্ন শিল্পকারখানার মালিক যুক্তি উত্থাপন করছেন যে তাঁরা এখানে যে ব্যবসা করছেন, সে ব্যবসা অব্যাহত রাখার আইনগত অধিকার তাঁদের আছে। তাঁরা বলছেন, হাইকোর্ট এর আগে ২০১২ সালে একটি অর্ডার দিয়েছিলেন। ওয়াসাকে জমি দিতে বর্জ্য শোধনাগার প্ল্যান্ট বা ইটিপি (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন করার জন্য।
‘পরে ইটিপি ছাড়া অবৈধভাবে চলা শিল্পকারখানা উচ্ছেদে পরিবেশ অধিদপ্তর যখন নোটিশ দিয়েছিল, তখন সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা উচ্চ আদালতে এসেছিলেন। ২০১৬ সালে আপিল বিভাগ স্যাটেল করে দিয়েছিল যে, পরিবেশ অধিদপ্তরের উচ্ছেদ নোটিশ বৈধ এবং ইটিপি ছাড়া কোনো শিল্পকারখানা চালানো যাবে না।’
আইনজীবী আরো বলেন, ‘আদালত এই শুনানির মধ্যেই বলেছেন, এ সমস্ত কাজ অব্যাহত থাকলে ঢাকার অবস্থাটা... বর্তমানে ঢাকাকে বিশ্বের এক নম্বর দূষিত শহর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পরিবেশ আইনে তো আছে যদি এই রকম দুরবস্থা হয়, সে ক্ষেত্রে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিকাল এরিয়া ঘোষণা করার বিধান আছে। এখন যেহেতু ঢাকা সবচেয়ে দুষিত নগরী, তাই গোটা ঢাকা শহরটাকেই ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া ঘোষণার জন্য সময় এসেছে।’
বুড়িগঙ্গার পানিদূষণরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিটটি করা হয়। রিটের শুনানি শেষে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১১ সালের ১ জুন রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের শুরুতে এ রায় নিয়ে এইচআরপিবি একটি সম্পূরক আবেদন করে।
বুড়িগঙ্গার পানি দূষণরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ওই রিট করা হয়েছিল। সে রিটের শুনানি শেষে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১১ সালের ১ জুন রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
চলতি বছরের শুরুতে এ রায় নিয়ে এইচআরপিবি একটি সম্পূরক আবেদন করেন।