রংপুরের গঙ্গাচড়ায় গত ৯ মাস ধরে মা-হারা এক ছাগলের বাচ্চাকে নিজের দুধ পান করাচ্ছে একটি গাভি। ঘটনাটি রীতিমতো মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে ছাগলের প্রতি গাভির এই মমতার দৃশ্যটি এক নজর দেখার জন্য ওই বাড়িতে ভিড় করছে স্থানীয়রা।

ঘটনাটি গঙ্গাচড়া উপজেলার গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের মেডিকেল পাড়ায়। সেখানকার প্রয়াত ইমদাদুল হক মিলনের বাড়িতে মায়ার বাঁধনে থাকা ছাগল ও গাভির দেখা মিলবে।

জানা গেছে, ছাগলটির মা বাচ্চা প্রসবের পর মারা যান। এরপর থেকে এতিম ছাগল ছানাকে বাঁচাতে গাভির দুধ পান করানো শুরু করেন মালিক মেহেরুন নেছা চায়না। দুধ পান করতে দেওয়া ওই গাভির নিজেরও বাচ্চা (বাছুর) রয়েছে। মেহেরুন অবুঝ এ প্রাণি দুটিকে আদর করে নামও দিয়েছেন। ছাগলের বাচ্চার নাম রবি, আর গাভির বাচ্চার নাম বাহাদুর। ওই নামে ডাক দিলেই ছুটে আসে ছাগল ও গাভির বাচ্চা।

প্রয়াত মিলনের স্ত্রী মেহেরুন নেছা চায়না জানান, এখন আর ধরে নিয়ে গিয়ে ছাগলের বাচ্চাকে গাভির দুধ পান করাতে হয় না। ছাগলের বাচ্চাকে নিজের সন্তানের মতো করেই দুধ পান করতে দেয় গাভিটি। শুরুতে বিরক্তবোধ থাকলেও এখন তা আর নেই।

চায়না আরও জানান, ছাগলের বাচ্চার বয়স ৯ মাস হতে চলেছে। আর গাভির বাচ্চাটির বয়স ১০ মাসের কাছাকাছি। এখন ছাগলের বাচ্চাটা ক্ষুধা পেলেই গাভির কাছে দুধ পান করতে ছুটে যায়। কোনো বাধা ছাড়াই গাভিও দুধ পান করতে দেয়। গাভির দুধ খেয়ে ছাগলের বাচ্চাটি বড় হচ্ছে।

গঙ্গাচড়ার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বারী স্বপন বলেন, ‘গরু-ছাগল আলাদা জাত হলেও এই বাচ্চা দুটির মধ্যে বেশ ভাবও রয়েছে। যেন একই মায়ের দুই সন্তান। গাভির দুধ পান করে ছাগলের বাচ্চা বড় হওয়ার দৃশ্য খুব কমই চোখে পড়ে। এটা ছাগলের প্রতি গাভির গভীর মায়া।’