রংপুরের হারাগাছে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে সোহেল রানা (২৭) নামের পুলিশের এক ভুয়া উপপরিদর্শককে (এসআই) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হারাগাছ পৌর এলাকার বানুপাড়া কলেজ মাঠ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ বুধবার দুপুরে তাকে রংপুর মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তার সোহেল রানার বাড়ি লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ছিরাগঞ্জ  গ্রামে। 

গৃহবধূর করা মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে মুঠোফোনে পরিচয় হয় সোহেল রানার সঙ্গে। এ সময় নিজেকে এসআই পরিচয় দেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে মুঠোফোনে কথা বলার একপর্যায়ে সোহেল রানার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে মুঠোফোনে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিডিও কলে ওই গৃহবধূর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে রাখেন সোহেল রানা। তারপর অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং সেই ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

সর্বশেষ গত ২৬ সেপ্টেম্বর সোহেল রানা হাতীবান্ধা থেকে হারাগাছে আসেন এবং ধর্ষণের ভিডিও পরিবারকে দেখানোর ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে নিজ বাড়িতেই ধর্ষণ করেন। এরপর গত সোমবার রাত ১১টার দিকে আবারও হারাগাছে গিয়ে ওই নারীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় তার চিৎকারে পাশের ঘর থেকে তার স্বামী বের হয়ে এসে তাকে ধরে ফেলেন। 

ঘটনাটি জানাজানি হলে হারাগাছ পৌরসভার কাউন্সিলরের পরামর্শে গতকাল সন্ধ্যায় সোহেল রানাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারাগাছ থানার এসআই নুরুজ্জামান কবির বলেন, ‘সোহেল নিজেকে এসআই পরিচয় দিয়ে ওই গৃহবধূর সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে বাদী জানিয়েছেন। তবে, সোহেল কোনো এসআই নন। তিনি ভুয়া পরিচয় দিয়েছিলেন। আজ দুপুরে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

এসআই নুরুজ্জামান কবির জানান, গতকাল রাতেই শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই গৃহবধূকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, ওই নারী বাদী হয়ে সোহেল রানাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। আজ দুপুরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।