চর দখল নিতে বাড়িতে আগুন দিয়ে লুটপাট, পুড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু
কক্সবাজারের চকরিয়ার কৈয়ারবিলের খিলছাদেক গ্রামে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। ওই গ্রামের ২৬টি ঘরে আগুন দিয়ে মালামাল লুট করে নিয়েছে তারা। হামলাকারীদের গুলিতে পাঁচজন ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। আগুনে পুড়ে মারা গেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব এক নারী।
মাতামুহুরী নদীর তীরে জেগে ওঠা চরের জায়গা দখল নিতে আজ বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে এই নারকীয় তাণ্ডব ও লুটপাট চালায় সন্ত্রাসীরা। আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া বৃদ্ধ মনোয়ারা বেগম (৫৫) মোজাহের আহমদের স্ত্রী।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসী জানান, কয়েক যুগ ধরে তাদের গ্রামের বিশাল অংশ মাতামুহুরী নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যায়। বেশ কয়েক বছর ধরে নদীর বুকে ধীরে ধীরে চর জেগে ওঠে। যাদের জায়গা জেগে ওঠে, তারা সেই জায়গায় বসতি গড়ে তোলে। কিন্তু নদীর পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন বরইতলীর গোবিন্দপুর গ্রামের সশস্ত্র লোকজন এপাড়ে এসে বারবার জেগে ওঠা জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে সেহরি খাওয়ার পর পরই শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী এসে একযোগে ২৬টি বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। নগদ টাকা, গবাদি পশু, ধান-চালসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ফাঁকা গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। পরে একযোগে সবকটি বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে সব বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ সময় কোটি টাকার মালামাল লুট ছাড়াও বেশ কয়েক কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি করে তারা।
এই নারকীয় তাণ্ডবের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ, থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, মাতামুহুরী নদীর সিকিস্তির জায়গা দখল নিতে এই নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের একদল সশস্ত্র গ্রামবাসী। এ ঘটনায় আগুনে পুড়ে মারা গেছে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক নারী। হামলায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। যারা এই তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত, তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।