আদমজী জুট মিল বন্ধের ১৮ বছর আজ
আজ থেকে ১৮ বছর আগে বন্ধ করে দেওয়া হয় এশিয়ার বৃহত্তম জুট মিল আদমজী জুট মিল। অব্যাহত লোকসানের অজুহাতে তৎকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ৫২ বছর পর ২০০২ সালের ৩০ জুন মিলটি বন্ধ করে দেয়। বন্ধ হয়ে যাওয়া মিলের জায়গায় পরবর্তী সময়ে গড়ে তোলা হয় আদমজী ইপিজেড।
২০০৬ সালের ৬ মার্চ আদমজী জুট মিলের জায়গায় আদমজী ইপিজেডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া
আদমজী ইপিজেডের প্লট সংখ্যা ২২৯টি। প্রতিটি প্লটের আয়তন ২০০ বর্গমিটার। আদমজী ইপিজেডের যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের মোট ৪৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যার মধ্যে ১১টি দেশি, ২৭টি বিদেশি এবং ১০টি যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।
আদমজী ইপিজেডের কারখানায়গুলোতে গার্মেন্টস, জিপার, কার্টন, হ্যাঙ্গার, লেভেল, ট্যাগ, জুতা, সোয়েটার, টেক্সটাইল, মোজা, জুয়েলারি, পলি ও ডায়িংসহ ইত্যাদি পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। যা শতভাগ রপ্তানিযোগ্য পণ্য।
আদমজী ইপিজেড চালু হওয়ার পর প্রথম অর্থবছরে বিনিয়োগ হয়েছিল মাত্র ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। আর প্রথম অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল দশমিক ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। শ্রমিক সংখ্যা ছিল মাত্র এক হাজার ৬২৫ জন। সময়ের পরিক্রমায় বিনিয়োগ যেমন বেড়েছে, তেমনি রপ্তানির পরিমাণও বেড়েছে।
বেপজার তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ (২০১৮-২০১৯) আদমজী ইপিজেডে মোট বিনিয়োগ হয়েছে ৫২১ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সময়ে বিদেশে রপ্তানি হয়েছে চার হাজার ৪৮৩ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি মিলে এ পর্যন্ত চাকর করছেন মোট ৬২ হাজার ২০০ জন। এখানে বিনিয়োগ বাড়ার ফলে বেড়েছে কর্মসংস্থান।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আদমজী পরিবারের তিন ভাই ওয়াহেদ আদমজী, জাকারিয়া আদমজী ও গুল মোহাম্মদ আদমজী মিলে সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ২৯৪ দশমিক ৮৮ একর জমি নিয়ে আদমজী জুট মিলস নির্মাণ করেন। পাঁচ কোটি টাকা বিনিয়োগে এক হাজার ৭০০ হেসিয়ান ও এক হাজার সেকিং লুম নিয়ে এ মিলের উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫১ সালের ১২ ডিসেম্বর। তখন আদমজী জুট মিলে প্রতিদিন গড়ে ২৮৮ টন পাটের চট উৎপাদন করা হতো। ওই সময় মিলে তিন হাজার ৩০০টি তাঁতকল বসানো হয়। তৎকালীন আদমজী জুট মিলের তৈরি চটের ব্যাগ ও বস্তা দেশের ভোক্তাদের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে রপ্তানি করা হতো। রপ্তানি করা পণ্যের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ৬০ কোটি টাকা আয় হতো।