সহিংসতার দু’বছর পর মণিপুরে গেলেন নরেন্দ্র মোদি

প্রায় দুই বছর আগে ভারতের মণিপুর রাজ্যে জাতিগত সহিংসতায় ২৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হওয়ার পর আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) অশান্ত উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটিতে সফর শুরু করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিন দিনের এই সফরে নরেন্দ্র মোদি আসাম ও বিহারেও যাবেন। আসাম বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্য এবং বিহার ভারতের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য, যার জনসংখ্যা অন্তত ১৩ কোটির বেশি। খবর এএফপির।
অক্টোবর বা নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আগে বিহার রাজ্য এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনি ক্ষেত্র। এটি ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দিভাষী রাজ্যগুলির মধ্যে একমাত্র রাজ্য যেখানে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কখনো এককভাবে শাসন করেনি।
বিহার ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র রাজ্য হিসেবেও পরিচিত। মোদি সেখানে ৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে কৃষি প্রকল্প, রেল সংযোগ, রাস্তা উন্নয়ন এবং একটি বিমানবন্দর টার্মিনাল প্রকল্প।
উত্তর-পূর্বের মণিপুর রাজ্যটি ২০২৩ সালের মে মাস থেকে তীব্রভাবে বিভক্ত হয়ে আছে। প্রধানত হিন্দু মেইতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং প্রধানত খ্রিস্টান কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই সহিংসতা শুরু হয়েছিল। এই সহিংসতায় কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যারা এখনো সরকারের স্থাপিত অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করছে।
কুকি-অধ্যুষিত শহর চূড়াচাঁদপুরে হাজার হাজার মানুষের এক সমাবেশে মোদি বলেন, ‘মণিপুরে জীবন স্বাভাবিক করতে ভারত সরকার সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আজ আমি আপনাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। ভারত সরকার মণিপুরের জনগণের সঙ্গে আছে।’ তিনি একইসাথে তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য শান্তি পথ বেছে নিতে সব গোষ্ঠীর প্রতি আবেদন জানান।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সর্বশেষ ২০২২ সালে এই রাজ্যটি সফর করেছিলেন। রাজ্যটি মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এবং দিল্লি থেকে এক হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যটিতে ৯৬০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন, যার মধ্যে পাঁচটি মহাসড়ক এবং একটি নতুন পুলিশ সদর দপ্তর রয়েছে।

মোদির বিজেপি দলের সদস্য ও মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং সেখানে রক্তপাত বন্ধ করতে ব্যর্থ হওয়ার সমালোচনার পর ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করেন। প্রায় ৩০ লক্ষ জনসংখ্যার এই রাজ্যটি তখন থেকে সরাসরি দিল্লি থেকে শাসিত হচ্ছে।
মেইতেই এবং কুকিদের মধ্যে ভূমি ও সরকারি চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। অধিকার গোষ্ঠীগুলো অভিযোগ করে যে, রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের লাভের জন্য এই বিভাজনকে উসকে দিয়েছেন।