ইরানের কাছাকাছি ঘাঁটিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান

যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি ঘাঁটি থেকে দুটি বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়ামে পাঠানো হয়েছে। বিমানগুলোর চূড়ান্ত গন্তব্য হলো ভারত মহাসাগরে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি ডিয়েগো গার্সিয়া। এই পদক্ষেপ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সম্ভাব্য মার্কিন হামলার জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। খবর আলজাজিরার।
ইরানের কাছাকাছি উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থান করছে মার্কিন যুদ্ধবিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস কার্ল ভিনসন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজবাহী আরেকটি রণতরী ‘ইউএসএস নিমিটজ’ দক্ষিণ চীন সাগর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে যাত্রা করেছে। এ ছাড়া গত কয়েকদিনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্তত ৩০টি যুদ্ধবিমান ইউরোপের দিকে পাঠানো হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর পাওয়া গেছে।
বিমানবাহী রণতরীগুলোর আবর্তন বা প্রতিস্থাপন স্বাভাবিক চলাচল প্রক্রিয়া বলে দাবি করছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। তবে এবার বি-২ বোমারু বিমান পাঠানোকে যুক্তরাষ্ট্রে কৌশলগত অবস্থান হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ডিয়েগো গার্সিয়া থেকে ইরানের দূরত্বে মাত্র একটি জ্বালানি রিফুয়েলিং স্টপ, যা বি-২ বোমারু বিমানগুলোকে ইরানে সরাসরি হামলা চালানোর সক্ষমতা প্রদান করে। এই বিমানগুলো তথাকথিত ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা বহন করতে সক্ষম, যা ভূগর্ভস্থ স্থাপনা লক্ষ্য করে আঘাত হানার জন্য তৈরি।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বাঙ্কার বাস্টার বোমাগুলোও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর পর্বতের গভীরে যথেষ্ট আঘাত হানতে পারবে না। ফলে খুব বেশি ক্ষতিসাধন হওয়ার সম্ভবনা নেই। ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি প্রায় ৯০ মিটার (২৯৫ ফুট) মাটির নিচে অবস্থিত, যা বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত জিবিইউ-৫৭ বাঙ্কার বাস্টার বোমাগুলো ৬০ মিটার (২০০ ফুট) পর্যন্ত গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম। ফলে ফোর্দোর মতো অত্যন্ত সুরক্ষিত স্থাপনার সম্পূর্ণ ক্ষতিসাধনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) একটি সভা করে তার বিকল্পগুলো বিবেচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমানের এই মোতায়েন ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।