পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা ‘গুরুতর যুদ্ধাপরাধ’ : ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের চালানো হামলাকে ‘গুরুতর যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। আজ শুক্রবার (২০ জুন) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দেওয়া এক ভাষণে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি চরম আঘাত হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি। খবর আলজাজিরার।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে আরাগচি বলেন, ইসরায়েল জাতিসংঘ সনদের ২ অনুচ্ছেদের প্যারা ৪ (রাষ্ট্রসমূহের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বা রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের হুমকি বা ব্যবহার থেকে বিরত থাকা) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন করে ইরানের বিরুদ্ধে একটি বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসন শুরু করেছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ১৩ জুন শুক্রবার ভোর থেকে ইরানের জনগণের পর একটি অন্যায্য যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। এই আগ্রাসনে সাধারণ সামরিক কর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সাধারণ মানুষসহ বেসামরিক ব্যক্তিরা হাতহত হয়েছেন। ইসরায়েলের আকস্মিক সশস্ত্র হামলায় আবাসিক এলাকা, সরকারি অবকাঠামো, হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
বিশেষ করে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়ে জোর দিয়ে আরাগচি বলেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের হামলা গুরুতর যুদ্ধাপরাধ। এতে করে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরও যোগ করেন, এই হামলাগুলো একটি চলমান কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাঝখানে চালানো হয়েছে। তিনি জানান, ১৫ জুন আমাদের মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল, আমাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য একটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক চুক্তি করার উদ্দেশ্যে।
আরাগচি ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে ‘কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংষের নীতির ওপর নজিরবিহীন আঘাত’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় জাতিসংঘভিত্তিক আন্তর্জাতিক আইন ব্যবস্থা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সতর্ক করেন।
নিজের পরিচয় তুলে ধরে আরাগচি বলেন, ‘এটি এমন একজনের আহ্বান যিনি তার সারা জীবন সংলাপ ও কূটনীতির পেছনে ব্যয় করেছেন। যিনি সাদ্দাম হোসেনের (ইরাকের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট) শাসনামলে চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধেরও একজন অভিজ্ঞ যোদ্ধা এবং জানেন কিভাবে তার প্রিয় মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হয়।
তার এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, ইরান কূটনৈতিক সমাধানের পথে থাকতে চাইলেও নিজেদের সুরক্ষায় তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।