পদত্যাগ করলেন মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

আইন প্রণেতাদের আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসান্নামস্রেইন ওয়ুন-এরদেন পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (৩ জুন) সংসদের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র বিক্ষোভের পর সংসদে গোপন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। খবর এএফপির।
গোপন ব্যালটে প্রায় ৮২ জন আইন প্রণেতা অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে ৪৪ জন ওয়ুন-এরদেনের প্রতি আস্থা বজায় রাখার পক্ষে ভোট দেন ও ৩৮ জন বিপক্ষে ভোট দেন। ১২৬ আসনের সংসদ থেকে প্রয়োজনীয় ৬৪ ভোট পেতে ব্যর্থ হওয়ায় ওয়ুন-এরদেন পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
সংসদে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওয়ুন-এরদেন বলেছেন, মহামারি, যুদ্ধ ও শুল্কসহ বিভিন্ন কঠিন সময়ে আমার দেশ-জনগণের সেবা করা সম্মানের বিষয়।
আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার উত্তরসূরি নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ওয়ুন-এরদেন।
উত্তর এশিয়ার স্থলবেষ্টিত দেশ মঙ্গোলিয়া কয়েক দশক ধরে গভীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। দেশের অনেকেই বিশ্বাস করেন, ধনী অভিজাতরা সাধারণ জনগণের ব্যয়ে বছরের পর বছর ধরে কয়লা খনির উত্থানের মুনাফা জমা করছে। ২০২১ সালে ওয়ুন-এরদেন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মঙ্গোলিয়া ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি ধারণা সূচকে নিচে নেমে এসেছে।
দেশটিতে ঘন ঘন বিক্ষোভ এবং অস্থিরতা দেখা গেছে। গত সপ্তাহে উলানবাটোরে শত শত তরুণ তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা একজন সরকারি কর্মচারীর সামর্থ্যের চেয়েও বেশি বিলাসবহুল জীবনযাপন উপভোগ করছেন।
গত মাসে এএফপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এসব অভিযোগকে ‘অপমানজনক’ বলে উল্লেখ করে তীব্রভাবে অস্বীকার করেছে।
অর্থনীতি ও ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে উদ্বেগও এ অস্থিরতাকে আরও উসকে দিয়েছে।
গত বছরের নির্বাচনের ফলে ওয়ুন-এরদেনের মঙ্গোলিয়ান পিপলস পার্টি (এমপিপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাওয়ার পর থেকে মঙ্গোলিয়া ত্রি-মুখী জোট সরকার দ্বারা শাসিত হচ্ছিল। যখন কিছু তরুণ ডিপি আইন প্রণেতা ওয়ুন-এরদেনের পদত্যাগের আহ্বানকে সমর্থন করেন, তখন এমপিপি গত মাসে জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম সদস্য ডেমোক্রেটিক পার্টিকে বহিষ্কার করে। এই পদক্ষেপ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবে।

সোমবার (২ জুন) শত শত তরুণ বিক্ষোভকারী সংসদ ভবনের বাইরের চত্বরে ভিড় করে। তারা সাদা প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করে ও স্লোগান দেয়, ‘পদত্যাগ করা সহজ।’ আয়োজক ২৪ বছর বয়সী উলামসাইখান ওটগন বলেছেন, সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ সর্বত্র প্রমাণ করেছে, তরুণরা সমাজে অন্যায়ের প্রতি খুবই সংবেদনশীল।