অপারেশন সিঁদুর নিয়ে পোস্টের জেরে ভারতে অধ্যাপক গ্রেপ্তার

অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার জেরে ভারতের অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিজেপি যুব মোর্চার এক নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
আজ রোববার (৮ মে) সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসিপি) অজিত সিং টেলিফোনে বলেন, ‘আলি খান মাহমুদাবাদকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কিত কিছু মন্তব্য করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অশোক বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের জানানো হয়েছে, অধ্যাপক আলী খান মাহমুদাবাদকে আজ ভোরে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে মামলার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে পুলিশ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বিশ্ববিদ্যালয়।’
হরিয়ানা রাজ্যের নারী কমিশন অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মন্তব্যের জন্য সহযোগী অধ্যাপক আলী খান মাহমুদাবাদকে নোটিশ পাঠানোর কয়েকদিন পরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
গত ১২ মে পাঠানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়, নারী কমিশন ৭ মে বা তার কাছাকাছি সময়ে অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান মাহমুদাবাদের করা ‘প্রকাশ্য বিবৃতি/মন্তব্যে’ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে নজরে এনেছে।

কমিশনের চেয়ারপারসন রেণু ভাটিয়া বলেন, ‘আমরা দেশের কন্যাদের -- কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংকে -- স্যালুট জানাই। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ানো একজন অধ্যাপক তাদের জন্য যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করেছেন...আমি আশা করেছিলাম, তিনি আজ অন্তত কমিশনের সামনে উপস্থিত হয়ে দুঃখ প্রকাশ করবেন।’
সহযোগী অধ্যাপক আলী খান মাহমুদাবাদের মন্তব্য কমিশনের নোটিশের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, কর্নেল কুরেশির প্রশংসা করা ডানপন্থি ব্যক্তিদের উচিত ‘গণপিটুনি’ ও ‘নির্বিচারে’ বাড়িঘর ধ্বংসের শিকার হওয়া মানুষের সুরক্ষা দাবি করা।
গত ২২ এপ্রিলের পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ৭ মে ভোরে অপারেশন সিঁদুরের আওতায় পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে বিভিন্ন অবকাঠামোতে আঘাত হানে, যা সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বর্ণনা করেছে দেশটি।
সহযোগী অধ্যাপক আলী খান মাহমুদাবাদ গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বলেছিলেন, নারী কমিশন তার মন্তব্য "ভুল বুঝেছে"। তিনি এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘আমি অবাক হচ্ছি, নারী কমিশন তার এখতিয়ার লঙ্ঘন করে, আমার পোস্টগুলোকে এতটাই ভুলভাবে পড়েছে এবং ভুল বুঝেছে, তারা (পোস্টের) অর্থই উল্টে দিয়েছে।’
আলী খান মাহমুদাবাদ আরও বলেন, তিনি শান্তি ও সম্প্রীতি প্রচারের জন্য এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর দৃঢ় পদক্ষেপের জন্য তাদের প্রশংসা করতে তার চিন্তাভাবনা ও বাক স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি যারা ঘৃণা প্রচার করে এবং ভারতকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের সমালোচনা করেছেন।