ফ্রান্সের প্রথম দফা নির্বাচনে এগিয়ে ডানপন্থিরা
ফ্রান্সে আইনসভার প্রথম দফার নির্বাচনে বুথ ফেরত জরিপে দেখা গেছে উগ্র ডানপন্থিরা সরকার গঠনে ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পদটি দাবি করতে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বাধীন মধ্যপন্থি দল এই নির্বাচনে তৃতীয় অবস্থানে চলে যেতে পারে। খবর এএফপির।
তবে আগামী ৭ জুলাই দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে মেরিনা লি পেনের নেতৃত্বাধীন ডানপন্থি ধারার দল ন্যাশনাল র্যালি পার্টি (আরএন) জাতীয় পরিষদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কিনা সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার হয়নি। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনেই নির্ধারণ হবে লি পেনের সঙ্গী ২৮ বছর বয়সী জর্ডান বারডেলা ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন কি হবেন না।
ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে ন্যাশনাল র্যালি পার্টির কাছে হেরে যাবার পর প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ পুরো জাতিকে স্তম্ভিত করার পাশাপাশি তার মিত্রদের বিস্মিত করে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন।
তবে ম্যাক্রোঁর এই বাজির উল্টো ফল হিসেবে দেখা যাচ্ছে তার দল পার্লামেন্টে অপেক্ষাকৃত কম আসনে জয়ী হতে যাচ্ছে। আর নির্বাচনের এই ফলাফলের কারণে তার মেয়াদের শেষ তিন বছর ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ কম শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবেও আবির্ভূত হতে যাচ্ছেন।
ফ্রান্সের নির্বাচনি সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস অনুসারে আরএন পার্টি ৩৩.২ থেকে ৩৩.৫ শতাংশ ভোট পেতে যাচ্ছে। বামপন্থি নিউ পপুলার ফ্রন্ট জোট পেতে যাচ্ছে ২৮.১ থেকে ২৮.৫ শতাংশ ভোট। আর ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থি শিবির পেতে যাচ্ছে ২১.০ থেকে ২২.১ শতাংশ ভোট।
নির্বাচনি সংস্থাগুলোর অভিক্ষেপ অনুসারে আরএন পার্টি দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের পর দেশটির ৫৭৭ আসনের জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে। তবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজনীয় ২৮৯ টি আসন তারা পাবে কিনা সে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।
নির্বাচনি সংস্থা ইপসোসের আভাস আরএন পার্টি ২৩০ থেকে ২৮০টি আসন পেতে পারে। আরেক সংস্থা ইফোপের আভাস দলটি পাবে ২৪০ থেকে ২৭০টি আসন। কেবলমাত্র ইলাবের আভাস অনুসারে দলটি ২৬০ থেকে ৩১০ টি আসনে বিজয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে।
এদিকে, এই প্রাথমিক ফলাফলের পর প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ উগ্র ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে বৃহত্তর জোট গঠনের ডাক দিয়েছেন। এর ফলে প্রথম ধাপে কোনো দল স্পষ্টভাবে বিজয়ী না হলে রান-অফ ভোটের দিকে এগিয়ে যাবে দেশটি। বামপন্থিদের জোট এবং ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থি দলের শিবির আশা করছে আরএন পার্টি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না।
ফ্রান্সের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আত্তাল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন উগ্র ডানপন্থিরা এখন ক্ষমতার দরজায়। তিনি আরএন পার্টিকে আর একটি ভোটও না দেওয়ার কথা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপের ভোট শেষে গ্যাব্রিয়েল আত্তালকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে।