‘ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে আইএসে যোগ দিতে চেয়েছিলাম’
বান্ধবীর ভালোবাসায় ‘অন্ধ’ ছিলেন মার্কিন যুবক মোহাম্মদ দাখলালা ওরফে মো। খ্রিস্টান থেকে মুসলমান হওয়া ওই বান্ধবীকে একসময় বিয়েও করেন তিনি। পরে স্ত্রীর প্ররোচনাতেই আইএসে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিরিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন দুজন।
সম্প্রতি সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এভাবেই আইএসে যোগ দিতে চাওয়ার পেছনের কাহিনী তুলে ধরেন মোহাম্মদ দাখলালা। সিরিয়া যাওয়ার চেষ্টায় বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হওয়া এই যুবককে আইএসকে সহায়তায় চেষ্টার অভিযোগে আট বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন মার্কিন আদালত। ২৪ বছর বয়সী মোহাম্মদের কারাভোগ শুরু হবে শিগগিরই।
সিএনএনের কাছে বিশদ সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ দাখলালা বলেন, যুক্তরাজ্যের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের মুসলমান পরিবারে জন্ম ও বেড়ে উঠেছেন মোহাম্মদ দাখলালা। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে ছোট। অপর ভাইদের মতোই সব ধর্মের মানুষের সঙ্গেই বন্ধুত্ব ছিল দাখলালার।
মিসিসিপি স্টেট ইউনিভার্সিটির সিনিয়র ইয়ারে জেলিন ইয়াংয়ের সঙ্গে মোহাম্মদ দাখলালার পরিচয় হয়। সাবেক চিয়ার লিডার ও রসায়নের ওই শিক্ষার্থীর প্রেমে পড়েন তিনি। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একসময় দাখলালার কাছে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আগ্রহ প্রকাশ করেন জেলিন। বিভিন্নভাবে তিনি দাখলালার কাছে এ সম্পর্কে জানতে চান। একসময় দাখলালাকে অবাক করে দিয়েই জেলিন ইসলাম গ্রহণ করেন। একপর্যায়ে নিকাব পরা শুরু করেন জেলিন।
ইসলাম গ্রহণের পর জেলিন বিভিন্নভাবে ইসলাম সম্পর্কে গভীরভাবে জানার চেষ্টা করেন। এই জানার অন্যতম একটি মাধ্যম ছিল ইন্টারনেট। যেখানে তিনি আইএস সম্পর্কে জানতে পান।
জেলিন মনে করতেন, আইএস মুসলমানদের জন্য কাজ করছে। একসময় জেলিনের আগ্রহেই দুজন আইএসকে সহায়তার পরিকল্পনা করেন। এক জন্য তাঁরা ইন্টারনেটে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন, যিনি সিরিয়ায় আইএস রিক্রুট করতেন বলে দাবি করেছিলেন। একসময় দাখলালা ও জেলিন গোপনে বিয়ে করেন এবং তুরস্কে যাওয়ার উদ্দেশে বিমানবন্দরে যান।
গত বছরের ৮ আগস্ট মিসিসিপির কলম্বিয়ার বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন দাখলালা ও জেলিন। দুজনেই আইএসকে সহয়তার জন্য সিরিয়ার যাওয়ার চেষ্টার কথা স্বীকার করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা ব্যুরো এফবিআইয়ের পাতা জালে ধরা পড়েছিল দাখলালা ও জেলিন। আইএসের রিক্রুট হিসেবে দুজনের যোগাযোগ ছিল আসলে এফবিআইয়ের গোয়েন্দাদের। বিমানবন্দরে দাখলালা ও জেলিনের জন্যই ওত পেতে ছিল এফবিআই।
দাখলালা ও জেলিন উভয়ের বিরুদ্ধেই আইএসকে সহায়তার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। তদন্তে জানা যায়, জেলিনই ছিলেন আসলে মূল পরিকল্পনাকারী। তাই ১২ বছর কারাদণ্ড হয়েছে তাঁর। আর তদন্তে সহায়তায় শাস্তি কম হয়েছে দাখলালার। আট বছর কারাদণ্ড হয়েছে তাঁর। শিগগিরই তাঁর শাস্তি শুরু হবে। বর্তমানে ২৪ বছর বয়সী দাখলালার শাস্তি শেষ হবে ৩২ বছর বয়সে।