মক্কা-রিয়াদে বন্যায় ১০ জনের মৃত্যু
মরুভূমির দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবে বন্যা দেখা দিয়েছে। কয়েকদিনের তুমুল বৃষ্টিপাত আর এ থেকে সৃষ্ট বন্যায় আজ বৃহস্পতিবার মক্কা প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ও রিয়াদে আরো তিনজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এবারের বন্যায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০।
আজ বৃহস্পতিবার দেশটির সিভিল ডিফেন্সের বরাত দিয়ে সৌদি গেজেট এ তথ্য জানিয়েছে।
রিয়াদে স্থাপিত সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেন্টার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩২৫ জন বন্যার্তকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১১৯টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বৃষ্টির তথ্য এবং অন্য সাহায্য চেয়ে ৯৭৮টি টেলিফোন পেয়েছে সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়। রিয়াদ, মক্কা, বাহা, জাজান, তাবুক, পূর্ব প্রদেশ এবং আসির এলাকা থেকে এসব টেলিফোন করা হয়েছে। এসব এলাকা থেকেই ওই ৩২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিভাগটি।
সৌদি গেজেটের ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বৃষ্টির পানি ও বন্যার পানি থেকে ৩২০টি গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। বৃষ্টি ও বন্যাকবলিত এলাকার জনগণকে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করে বাড়ি থেকে বের হতেও বলা হয়েছে।
বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ চলে গেছে পৌরসভাগুলোর কাছে অভিযোগ আসছে। এ ছাড়া ট্রাফিক বিভাগেও বহু দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ পয়নিষ্কাশনের নালা ও খালগুলো পরিষ্কার করে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করছে। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে মিলে বহু স্বেচ্ছাসেবী আটকেপড়া মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বন্যায় বহু এলাকার রাস্তা, বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। তবে সময়মতো যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় সরকারের বেশকিছু বিভাগের সমালোচনাও করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ইহসান আবু হিলাকিয়া সৌদি গেজেটকে বলেন, সৌদি আরবে ৫৯ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয় না। যা বাংলাদেশে হওয়া বৃষ্টিপাতের তুলনায় ০.০৪৫ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির পরিমাণ খুব সামান্য হলেও আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও পানি নিষ্কাশন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে কাজ করতে পারেনি।’
পানি নিষ্কাশন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে কাজ করেনি অভিযোগ করে এসবের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে দেশটির জাতীয় দুর্নীতিবিরোধী কমিশন-নাজাহারকে অনুরোধ করেছেন এই অর্থনীতিবিদ।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলেন আসির প্রদেশে বন্যায় অন্তত তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া গত বছরের নভেম্বর মাসেও প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে রিয়াদ ও আল কাশেম প্রদেশে বন্যা সৃষ্টি হয়। এতে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।