‘সমস্যা জটিল, ভারতে এবার দাঙ্গা লেগে যাবে’
ভারতে ৫০০ ও এক হাজার রুপির নোট বাতিলের পর এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার কেন্দ্রীয় সরকারের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেন দেশটির শীর্ষ আদালত। শুক্রবার এই দেশের আর্থিক খাতে মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত পর্যবেক্ষণ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দেশের অবস্থা সংকটজনক বলে মত দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের আশঙ্কা, ‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দেশে প্রকাশ্যে দাঙ্গা লেগে যাবে।’
নোট বাতিলে জনগণের সমস্যা বাড়ছে জনস্বার্থে করা এমন এক মামলার রায় দিতে গিয়ে আজ শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর বলেন, হঠাৎ করে বড় দুটি নোট বাতিল করে জনগণকে কঠিন সমস্যার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এর বিকল্প ১০০ রুপির নোটেরও পর্যাপ্ত জোগান নেই বাজারে। এ অবস্থায় নিত্যদিনকার জীবনযাপনেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনগণকে। অর্থ নিয়ে জনগণের এই ভোগান্তির জেরে টি এস ঠাকুর সরকারকে প্রশ্ন করেছেন, ‘৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল করা হয়েছে, কিন্তু বাজার থেকে ১০০ রুপির নোটগুলো কোথায় গেল?’
ভারতের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনো প্রকার প্রস্তুতি ছাড়া এভাবে বাজার থেকে নোট বাতিলে চরম বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত রুপি না থাকায় এবং দীর্ঘ সাতদিন ধরে এই পরিস্থিতি চলায় মানুষ বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে।
রুপি তুলতে গিয়ে মানুষকে ব্যাংকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এ ছাড়া চাপ পড়েছে ব্যাংকের কর্মীদের ওপরও। টানা কাজ করতে গিয়ে ব্যাংকের অনেক কর্মীই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ ছাড়া বর্তমানে রুপির চাহিদার তুলনায় জোগান কম হওয়ায়, খুব তাড়াতাড়ি এটিএমগুলোর রুপি শেষ হয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় সরকারি কৌঁসুলিদের জবাব, এটিএম বুথগুলোকে পুনর্বিন্যাস করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ ১০০ রুপির নোটের জন্য বুথে কেবল একটি ড্রয়ার রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া ৫০০ ও এক হাজার রুপির নোটের ড্রয়ারগুলো ফাঁকাই পড়ে থাকছে। এতে এটিএমের বুথগুলো বারবার ভরতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তি বাড়ছে। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলেও জানান সরকারি কৌঁসুলি।
কেন্দ্রকে আদালতের প্রশ্ন এটিএমগুলোতে রুপি রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কেন আগাম নেওয়া হয়নি। কেন ড্রয়ারগুলোতে শুধু ১০০ রুপির নোট রাখার ব্যবস্থা রয়েছে?
এর আগেও গত ৮ নভেম্বর মোদি সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে সংক্রান্ত মোট আটটি রিট গত ১০ দিনে দেশটির শীর্ষ এই আদালত নিষ্পত্তি করেছেন।