কাশ্মীরে ‘ভারতবিরোধী’ ১২ কর্মকর্তা বরখাস্ত
ভারতের অশান্ত কাশ্মীরে লাগাতার অশান্তিতে লাগাম টানতে চাইছে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য সরকার। উপত্যকার মাটিতে শান্তি ফেরাতে এবারে রীতিমতো সাহসী পদক্ষেপ নিল জম্মু-কাশ্মীরের মেহবুব মুফতি সরকার। ভারত বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ১২ জন সরকারি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে রাজ্য সরকার।
বুধবার সন্ধ্যায় জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য সরকারের তরফে এই কর্মকর্তাদের বরখাস্তের কথা ঘোষনা করা হয়। ১২ জনকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি আরও প্রায় ১০০ জন সরকারি কর্মকর্তার উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে বরখাস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহকারি রেজিস্টার, রাজ্যের শিক্ষা, রাজস্ব, জনস্বাস্থ্য, কারিগরি এবং খাদ্য দফতরের বেশ কয়েকজন রয়েছেন। জানা গেছে, বরখাস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে নজরদারী চালানোর পর দেশবিরোধী কার্যকলাপ সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করে পুলিশ মুখ্য সচিবের কাছে পাঠায়। এরপরই সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর প্রধানদের ওই কর্মকর্তাদের চাকরি খারিজের নির্দেশ জারি করেন রাজ্যের মুখ্য সচিব।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই মাসে হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে জম্মু-কাশ্মীরে সহিংসতা শুরু হয়। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অশান্তি বিরাজ করছে উপত্যকায়। এখনও কাশ্মীরের বেশ কিছু স্থানে ভারতীয় সেনা, আধাসেনা, বিএসএফ ও পুলিশের কড়া পাহারা চলছে। কিছু এলাকায় রয়েছে কারফিউও। উপত্যকার বহু জায়গায় জনজীবন এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চাপের মধ্যে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর সরকার।
সংবাদমাধ্যম জানায়, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুব মুফতি সরকার বারবার বলে আসছিলেন, উপত্যকায় গুটিকয়েক মানুষের মদতেই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। মনে করা হচ্ছে, সেই ভিত্তিতেই এই তালিকা তৈরি করে ১২ জন সরকারি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হলো।
জানা গেছে, দীর্ঘ ২৬ বছর পর দ্বিতীয়বার এমন কড়া সিদ্ধান্ত নিলো জম্মু-কাশ্মীর সরকার। এর আগে ১৯৯০ সালে উপত্যাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ সরকারী কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।