পাকিস্তানের মাটিতে হামলা করার কথা স্বীকার করেছে ভারত। তাদের দাবি, পাকিস্তানের মাটিতে অবস্থান করা জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি বা লঞ্চিং প্যাড লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।

ভারত এই হামলাকে বলছে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’। জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পাকিস্তান অংশে অবস্থান নিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের ধ্বংস করতেই এই হামলা।

হামলায় সাতটি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো।

এদিকে ভারতের চালানো হামলায় দুই পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন বলে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানের আন্তবাহিনী গণসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত এই গোলাগুলি চলে।

দুপুরে ভারতের কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশন (ডিজিএমও) রণবীর সিং এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানান, রাতের এই হামলা ছিল সন্ত্রাসী ও তাদের মদদদাতাদের লক্ষ্য করে। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানের প্রতি তাঁদের সীমানা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে না দিতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তার কিছুই হয়নি।’

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বলতে সেই ধরনের হামলাকে বোঝানো হয় যেখানে শত্রুপক্ষের নির্দিষ্ট স্থাপনা বা স্থানকে লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট আঘাত করা হয়। এই ধরনের হামলার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রযুক্তি ও পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়। যার মাধ্যমে অন্য কারো সর্বনিম্ন পরিমাণ ক্ষতিসাধন করে লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করা হয়।

একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, এই হামলায় কোনো ভারতীয় হতাহত হননি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সন্ত্রাসীদের নির্দিষ্ট স্থান লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল এবং এ সম্পর্কে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকেও অবহিত করা হয়েছিল। রণবীর সিং আরো জানান, হেলিকপ্টারে করে নিয়ন্ত্রণ রেখা পার হয়ে পাক ভূখণ্ডে ঢোকে ভারতীয় সেনা। নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে ৫০০ মিটার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার হেঁটে জঙ্গিঘাঁটিতে হামলা চালায় তারা। আঘাত হানা হয়েছে পাকিস্তানের ভিম্বার, হটস্প্রিং, লিপা ও কেল সেক্টরে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে প্রশিক্ষণের কথা স্বীকার করেছে। এমনকি তাদের সঙ্গে থাকা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম থেকেও পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র প্রমাণিত হয়েছে।

গত ১৮ অক্টোবর উরি হামলার পর এই প্রথম সামরিক হামলা চালাল ভারত। এই হামলার পর নরেন্দ্র মোদি হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।