১৬ বছর পর অনশন ভেঙে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান শর্মিলা
ভারতের মণিপুরের কিংবদন্তি অ্যাক্টিভিস্ট ইরম শর্মিলা (৪৪) দীর্ঘ ১৬ বছর পর অনশন ভেঙেছেন। আজ মঙ্গলবার হাতে করে মধু মুখে দেওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এ সময় নতুন জীবন শুরু করার ঘোষণা দেন শর্মিলা। রাজনীতি করবেন, বিয়ে করবেন। তিনি বলেন, ‘আমি দেবী নই। আমি মণিপুর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে চাই।’ মণিপুরে সেনাবাহিনীর হামলার প্রতিবাদে এ অনশন শুরু করেছিলেন তিনি।
আজ সকালে শর্মিলা কারাগারের হাসপাতাল ছেড়ে যান। এতদিন তাঁকে প্লাস্টিকের নল দিয়ে জোর করে খাওয়ানো হতো। আত্মহত্যা চেষ্টার অপরাধে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল।
এনডিটিভি জানিয়েছে, শর্মিলার সমর্থক ও তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁর আকস্মিক অনশন ভাঙার ঘটনায় আশ্চর্য হয়েছেন এবং এটা অনেকে ভালোভাবে নেননি।
রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে শর্মিলা থেমে থেমে স্পষ্ট উত্তর দিলেন, ‘এটা আমার জীবন। আমি সমতা চাই।’
শর্মিলা জানান, তিনি বিয়ে করতে চান। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি গোয়ায় বসবাসরত ব্রিটিশ নাগরিক ডেসমন্ড কৌটিনহোর সঙ্গে চিঠি আদান-প্রদান করেছেন। প্রেম করছেন কি না জানতে চাইলে শর্মিলা বলেন, ‘এটাই স্বাভাবিক।’
আদালতের নির্দেশে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে শর্মিলা বলেন, ‘আমাকে অচেনা নারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। লোকজন আমাকে কেন সাধারণ মানুষ হিসেবে দেখে না? আমি সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি।’
২০০০ সালে মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১০ জন নিহতের ঘটনায় অনশন শুরু করেন ইরম শর্মিলা। সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তিনি। এ আইনে সেনাবাহিনীকে কোনো নাগরিককে তল্লাশি, বাড়িঘরে প্রবেশ ও দেখামাত্র গুলি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়।
শর্মিলা এখন মণিপুরের আগামী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করবেন। তিনি বলেন, ‘লোকজন বলে রাজনীতি নোংরা, সমাজও তো সেই রকম।’ তাকে মণিপুরের লৌহমানবী বলা হয়ে থাকে।